মামুনুর রশীদ
বিদ্রোহ বিপ্লবের ঔরসজাত সন্তান। খরস্রোতা যমুনার স্বচ্ছ জলের মতো মেঘনা, ইছামতি, করতোয়া'র নিমগ্ন পলির মতো তাঁর লেখনি। শিল্পের জটিল কৈবল্যকে আড়ালে রেখে মায়ের মতো নিরাভরণ সংলাপে উচ্চারিত তাঁর উপলব্ধি। মা যেমন কথা বলেন, সাধারণ অতি সাধারণ ঢংয়ে স্নিগ্ধ স্নেহে ভালোবাসায়, সরলতায়। বিপরীতে সন্তান সুরক্ষায় সর্বদা সজাগ, প্রয়োজনে হাতিয়ার হাতে; তেমনি মানুষ ও সমাজ প্রহরায় বিনিদ্র তাঁর জীবন।
ফসলের মাঠে অপুষ্ট শষ্যবীজ অকালে ঝরে গেলে যুদ্ধের ডাক দেয় তার কলম। ফাল্গুনের ঝরা পাতা দিয়ে তিনি গাঁথেন সাম্যের অলঙ্কার, এসবই তাঁর সৃজনের অহংকার। রাজগৃহ থেকে কুটিরের তাবৎ বৈষম্য তাঁর লেখনির বিষয়। নিজ আঙিনা থেকে বিশ্বভূগোলের সকল বঞ্চিত মানুষের ঘাম হয়ে ওঠে তাঁর কলমের কালি। তা থেকেই নির্মিত মামুনুর রশীদের নাট্যজমিন। এ জমিন সাদা ফরাসের মতো শুভ্র নয়, নয় গোলাপের পাঁপড়ির মতো কোমল। তা রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত অন্যায় অবিচার অসাম্যের ছুরিকাঘাতে। তারই বিরুদ্ধে সদা ধাবমান নাট্যমঞ্চের সেনাপতি নাট্যকার, নির্দেশক ও অভিনেতা মামুনুর রশীদ।
মূলত: তিনি নাট্যকার হলেও তাঁর প্রবন্ধ, কলাম গদ্য, নাটকের সংলাপের মতোই ঝরঝরে তরতর করে পাঠককে নিয়ে যায় এক অনায়াস সাবলীল অনুভবের দিকে।