আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে, কিছুটা বা আকস্মিকভাবে, আমার ওপর দায়িত্ব পড়ে নন্দনতত্ত্বের ক্লাস নেওয়ার। আমি তখন সদ্য প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম চারুকলা কলেজের নবীন শিক্ষক, আবার উপরি উপাধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করি।
সম্ভবত পঁচাত্তরের শেষ ভাগের ঘটনা, দেশ তখন খুবই অনান্দনিক অশুভ রক্তচক্রের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। হঠাৎ করেই প্রতিষ্ঠাতা-অধ্যক্ষ সবিহ-উল আলম জানালেন, তৃতীয় বর্ষে নন্দনতত্ত্বের ক্লাস নিতে হবে আমাকে। দু'বছর বয়েসি কলেজটায় তখন উৎসাহ-উদ্দীপনার জোয়ার চলছে। নবীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরুণ ছাত্রদের সতেজ প্রফুল্ল মানস জাতীয় পটভূমির ভারাক্রান্ত পরিবেশ থেকে আত্মরক্ষা ও জেগে ওঠার চমৎকার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিল। যে কোন চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করাই সঙ্গত মনে হয়েছে, সামনে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া অন্য বিকল্প ভাবার অবকাশও ছিল না, অভ্যাসও হয় নি।
নন্দনতত্ত্ব কী যেন? ও শিল্পকলার ভেতরকার কথা, ইংরেজিতে যাকে বলে Aesthetics। শিল্পতত্ত্ব, সৌন্দর্যতত্ত্ব, শিল্পদর্শন এবং সৃজনশীল শিল্পীদের শিল্পভাবনা মিলিয়ে একটা বিষয়। তখনও বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এ বিষয় পড়ানো হয় না, ফলে সিলেবাসের নমনা পাওয়ার উপায় ছিল না।