উনিশো একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধে প্রাপ্ত স্বাধীনতা এসেছে তিরিশ লাখ শহীদের রক্তে । এইসব শহীদের অনেকের রক্তাক্ত লাশ , কুকুর শেয়ালে খাওয়া লাশ , গুলিবিদ্ধ মুক্তিযোদ্ধার লাশ , গনহত্যায় শহীদের লাশ আমি দেখেছি ও কবরে দিয়েছি । স্বাধীনতার পর থেকে উনিশ শো ছিয়াত্তর কালখন্ডে এই পোড়া বাংলাদেশের জীবন ও রাজনীতি চিত্রের ভোক্তা ও দর্শক ছিলাম আমি । নিজেকে পোড়া মানুষ , পোড়া বাড়িঘর , পোড়া মানুষের উত্তরাধিকারীদের আহাজারি , মুক্তিযোদ্ধার অবমূল্যায়ন আমাকে পীড়া দিয়েছে । পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারে নি অনেকে । কি হঠকারী রাজনীতি দেশ আকালের দিকে ঠেলে দিয়েছিলো । সে আকালেরও ভূক্তভোগী আমি । এই কালখন্ডের এক হতাশ যুবকের জীবন আমার ঘোরলাগা ঘোর উপন্যাসের মূল কাহিনী কথা । উত্তম পুরুষে বর্ণিত এ উপন্যাস । লিখাটিকে শক্তিশালী ও কালখন্ডকে বস্তুনিষ্ঠ করার প্রয়াসে উত্তম পুরুষে লেখাকে সংগত মনে করেছি । কাহিনী নির্মানের ক্ষেত্রে স্থানগুলির অবস্থান ও অনেক ক্ষেত্রে আপন জীবনের কিছু ছায়া পড়তেই পারে । তবে কালখন্ড সঠিক রেখে বাকি চরিত্র সম্পূর্ণ কাল্পনিক । মৃত বা জীবিত কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে কাহিনীর যোগসূত্র নেই । কালখন্ডের প্রয়োজনে চরিত্র নির্মিত হয়েছে । চরিত্র এখানে গৌন বিষয় । আশা করি কালখন্ড বিচারের জন্যেই আমার ঘোরলাগা ঘোর উপন্যাসটি পঠিত হবে । এটি লিখতে আমার সাথে ছিলেন আমার কিছু ফেসবুক বন্ধু । তাদের সবার প্রতি আমার প্রাণের ভালোবাসা ।