বেলা প্রায় চারটে নাগাদ গাড়িটা একেবারে স্কুলবাড়ির দরজায় এসে দাঁড়াল। ড্রাইভারের পেছনে, ডানদিকের দরজা খুলে পরমেশই নামলেন প্রথম। দীর্ঘদেহে নেভি-ব্লু প্যান্ট আর গাঢ় হলুদ শার্ট, এলোমেলো চুলে বেশ কিছুটা পাক ধরেছে যদিও, মাথা ভরে একরাশ ঘন চুলে ঝোড়োহাওয়া বয়ে যাওয়ার অবশেষ। প্রায় পঞ্চাশ-বাহান্ন বছরের চেহারার আদলে মনীষীসুলভ এমন কিছু নেই অথবা গ্রামবাসীর কাছে হয়তো এটাই তাজ্জব, খবরের-কাগজের ছাপা-ছবি থেকে কালেভদ্রে এঁরা কেউ কাছাকাছি এসে দাঁড়ালে, অবাক কাণ্ড, এঁদের সচলতায় অবিকল মানুষের আচরণ।
সকাল থেকেই স্কুলের বড় ফটকের বাইরে ভিড় করে ছিল নানা বয়সের গাঁয়ের মানুষ। দুপুরের পর ভিড়টা আরও বেড়েছে। বড় ভ্যান আর জিপ গাড়িটাকে তারা দুদিন আগে থেকেই দেখছে। দুটো অ্যাম্বেসেডরের পর তৃতীয়টি এসে পৌঁছোতেই জনতা চঞ্চল হলো। ঘিরে ফেলল আসল মানুষকে।
পরমেশ নেমেই গাড়িগুলো দেখলেন পর পর। পড়ন্ত বেলায় স্কুলবাড়ির সম্মুখবর্তী কয়েক ফুট চওড়া এবড়ো খেবড়ো রাস্তার প্রায় সবটা জুড়ে লক-করা গাড়িগুলো স্থির।