দীর্ঘ পনেরো বছরের বেশি সময় ধরে সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি, বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার, বিরোধী মতের লোকদের দমনপীড়ন, গুম, খুন, অপহরণ, আয়নাঘর ও টর্চার সেলে নির্যাতন। দলীয় ক্যাডার বাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও প্রশাসনকে দলীয় কাজে ব্যবহারের এমন নজির ইতিহাসে আর একটিও পাওয়া যাবে না। ‘ফ্যাসিবাদ’ একটি দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, তা জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের মাধ্যমে জনগণের চোখের সামনে পরিস্কার হয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে দেশের অধিকাংশ মানুষের মতামতকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে নিজের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করা। আওয়ামী লীগ না করলে সবাই ‘রাজাকার’ এমন তকমা দিয়ে দমিয়ে রাখার মনমানসিকার বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের এক সফল প্রয়াস জুলাই-আগস্টের বিপ্লব বা গণ-অভ্যুত্থান। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে থাকবে বলে আমি মনে করি।
ভারতীয় আগ্রাসন ও শোষকের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক শোষিত-বঞ্চিতদের প্রতিরোধের মুখে ফ্যাসিবাদের দোসরদের এই দেশ থেকে পালিয়ে ভারতের বুকে আশ্রয় নেয়ার মাধ্যমে জনগণের বিজয় সুচিত হয়। পনেরো বছরের ফ্যাসিবাদী সরকারকে মাত্র ৩৬ দিনের তুমুল আন্দোলনের মুখে বিদায় জানানো এক অবিস্মরণীয় ঘটনা বটে। তবে অকালে ঝরে গেছে হাজার হাজার প্রাণ, অন্ধ হয়েছে দশ হাজারের বেশি মানুষ, আহত-পঙ্গু হয়েছে বিশ হাজারের বেশি মানুষ। বুক পেতে দিয়ে পুলিশের গুলির মুখে ঝাপিয়ে পড়ে জীবন দিয়েছে শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিমের মতো হাজারো তরুণ। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন বীর শহীদদের কথা জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। এখন সময় এসেছে, বীর শহীদদের রক্ত যেন বৃথা না যায়, সে মোতাবেক সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের জন্য কাজ করা। তবেই বীর শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে।
কবি ও কলামিস্ট আবুল খায়ের নোয়াখালী জেলার আওতাধীন সেনবাগ উপজেলার পূর্ব মোহাম্মদপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ৩০ ডিসেম্বর ১৯৭৬ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা-মোহাম্মদ ইসহাক, মাতা-শামসুন্নাহার বেগম। পড়ালেখা: সরকারী তিতুমীর কলেজ থেকেস্নাতক; ঢাকা কলেজ থেকে এম.এ এবং মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার উপর PGD (ABP/UK) উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। দেশের বাহিরে ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট এবং মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। লেখালেখি: স্কুল জীবন থেকেই ছড়া, কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস লেখালেখি করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তাঁর লেখা বিভিন্ন সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকা/ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হতে থাকে। কলেজ জীবনেই অনেকগুলো কলেজ বার্ষিকী ও স্মরণীকা সম্পাদনা করেছেন। বিভিন্ন যৌথ কাব্যগ্রন্থ, ম্যাগাজিন ও লিটলম্যাগে তাঁর লেখা প্রকাশিত হচ্ছে। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় নিয়মিত লিখছেন। ইতিমধ্যে কলামিস্ট হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। সম্মাননা: ‘কবিসংসদ বাংলাদেশ’ ঢাকা কর্তৃক প্রদত্ত: কবি জসিম উদ্দীন সাহিত্য পদক-২০১৯ (কবিতায়); কবি জীবনানন্দ দাশ সাহিত্য পুরস্কার-২০১৮ (কবিতায়); ‘উত্তরণ সাহিত্য আসর’ পাবনা কর্তৃক প্রদত্ত কবি বন্দে আলী মিয়া সাহিত্য পদক (প্রবন্ধে) ছাড়াও আরো অনেক সংস্থা কর্তৃক ক্রেষ্ট ও সম্মাননা অর্জন করেন। তিনি রংপুর বেতারে স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর ছাড়াও বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত আছেন। তাঁর রচিত গ্রন্থাবলিঃ দীর্ঘশ^াসের সাথে বসবাস (কবিতা), অসহিষ্ণু পৃথিবীর বুকে (কবিতা), জীবনের প্রবাহ (প্রবন্ধ), দীর্ঘশ্বাসের সাথে বসবাস (উপন্যাস), ছড়ার দেশে খোকা খুকি বেড়ায় হেসে (শিশুতোষ ছড়া), বন্ধুর জন্য (কিশোর গল্প), তুমি ফিরে এলে (গানের সংকলন) ইত্যাদি। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ : অসহিষ্ণু পৃথিবীর বুকে (বইমেলা-২০১৯)। এছাড়াও শতাধিক যৌথ কাব্যগ্রন্থে ও লিটলম্যাগে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিদিন কোনো না কোনো প্রত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হচ্ছে। পেশাগত জীবন: বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায়-ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।