বর্তমানে নেক আমলের প্রতি চরম উদাসীনতা এবং গুনাহের প্রতি আগ্রহ খুব পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাকওয়া পরহেযগারীর প্রতি মনোযোগ একেবারেই নেই। যাদেরকে দ্বীনদার মনে করা হয় তারাও বিভিন্ন গুনাহে লিপ্ত। প্রত্যেকে নিজের ইচ্ছেমতো খণ্ডিত দ্বীন পালন করে চলছে। যে যতটুকু দ্বীন পালন করছে, সেটাকেই যথেষ্ট মনে করছে। আর দ্বীনের অন্যান্য ক্ষেত্রে শরীআত-বিরোধী যে কার্যকলাপ হচ্ছে, তা থেকে বেঁচে থাকার কোনো চেষ্টাই নেই। লাখো মানুষ এমন আছেন যারা নিজেদেরকে মুসলমান দাবি করেন বটে, কিন্তু আপাদমস্তক বিভিন্ন গুনাহে নিমজ্জিত। পাপাচারে তারা এত অগ্রসর যে, গুনাহ বর্জন করা এবং তাওবা ও ইস্তিগফারে মনোনিবেশ করার চিন্তাও কখনো করে না। বরং তাদের অনেকে এমন আছেন, যারা মনে করেন, এত গুনাহ করেছি, এখন কি আর তাওবা কবুল হবে?
এই বিষয়গুলো সামনে রেখে ইচ্ছে হলো, তাওবার হাকীকত ও প্রয়োজনীয়তা এবং ইস্তিগফারের দ্বীনী ও দুনিয়াবি উপকার বিষয়ে একটি পুস্তিকা রচনা করি। যাতে সব ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার গুরুত্বারোপের পাশাপাশি আল্লাহ তাআলার অপার দয়ার আলোচনাও থাকবে। সেইসাথে এটাও উপস্থাপন করা হবে যে, কোনো ব্যক্তি যেমনই গুনাহগার হোক না কেন, তার গুনাহ যত বেশিই হোক না কেন, তার জন্য তাওবার দরজা খোলা আছে। যতদিন পর্যন্ত পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত না হবে এই দরজা খোলা থাকবে। কোনো বান্দা যেন আল্লাহ তা'আলার রহমত থেকে নিরাশ না হয়। সবসময় যেন আল্লাহ তাআলার দিকে প্রত্যাবর্তন করতে পারে।
মাওলানা আশেক এলাহী বুলন্দশহরী (রহ.) ছিলেন উপমহাদেশের অন্যতম শ্রদ্ধাভাজন আলেম, প্রখ্যাত মুফাসসির, হাদীস ও ফিকহ বিশারদ এবং একজন সুফি লেখক। তাঁর জন্ম ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বুলন্দশহর জেলায়। বুলন্দশহর থেকেই তাঁর নামের শেষে "বুলন্দশহরী" যুক্ত হয়েছে। তিনি বিখ্যাত দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে পাকিস্তানের করাচি শহরে হিজরত করেন। সেখানে তিনি দীর্ঘদিন জামিয়া উলুম ইসলামিয়া, বানুরি টাউন-এ শিক্ষকতা করেন এবং বহু ছাত্রকে আলোকিত করেন। মাওলানা আশেক এলাহী (রহ.) তাঁর সুগভীর জ্ঞান, প্রাঞ্জল ভাষা ও সহজবোধ্য উপস্থাপনায় ইসলামী জ্ঞানভাণ্ডারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি মূলত হাদীস, তাফসীর, ফিকহ ও আত্মশুদ্ধিমূলক বিষয়ের ওপর বিশুদ্ধ আকীদাভিত্তিক বহু মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন।