ষোড়শ শতকের ইংল্যান্ড। বিজ্ঞান শব্দটি তখনও অজানা। ইংল্যান্ডের রাজনৈতিক ভূগোলের সঙ্গে তখনও যুক্ত হয়নি স্কটল্যান্ড আর আয়ারল্যান্ড। এই সময় ইংল্যান্ডের রাজমুকুট উঠল পঁচিশবর্ষীয়া এক প্রোটেস্ট্যান্ট নারীর মাথায় যাঁর নাম এলিজাবেথ টুডর। এলিজাবেথ টুডরের চুয়াল্লিশ বছরের রাজত্বে ইংল্যান্ড পৌঁছে যায় স্বর্ণযুগের দোরগোড়ায়। গোটা ইউরোপে তখন বিজ্ঞান-চেতনার প্রদোষকাল। দর্শন থেকে বিজ্ঞানকে ছেঁকে বের করতে হবে, ব্রহ্মাণ্ড অসীম, পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরে ইত্যাদি কথা প্রচার করতে চাইছেন ব্রুনো, গ্যালেলিও, ব্রাহের মতো পণ্ডিতেরা। অপরদিকে রোমান চার্চ এইসব নতুন চিন্তাধারাকে প্রশ্রয় দিতে নারাজ, তারা পুরনো ধারণা আঁকড়ে রাখতে চায়। এই উত্তাল আবহাওয়ায় ইংল্যান্ডে, বিজ্ঞান-চেতনার সূচনা হয় এক প্রথিতযশা ডাক্তারের পরীক্ষালব্ধ গবেষণার মাধ্যমে যাঁর নাম উইলিয়াম গিলবার্ট। জীবনের শেষ তিনটি বছর রানি এলিজাবেথের রাজচিকিৎসক ছিলেন ড. গিলবার্ট। চুম্বক এবং ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং গবেষণার প্রথম ধাপ তৈরি করেছিলেন ড. গিলবার্ট। ইউরোপে জ্ঞানচেতনার উন্মেষ যার উৎসে আছে ত্রিধারা— গিলবার্ট, ব্রুনো আর গ্যালেলিও। কেমনভাবে মিশে ছিল এই তিন ধারা? আধুনিক বিজ্ঞানের সূচনাকাল স্যর আইজ্যাক নিউটনের সময় শুরু হলেও জ্ঞানচর্চার উৎসমুখ আরও একশো বছর আগেকার। ষোড়শ শতকের জ্ঞানচর্চার তিন প্রাণপুরুষ গিলবার্ট, ব্রুনো এবং গ্যালেলিওর মধ্যে যিনি সর্বাপেক্ষা কম পরিচিত সেই উইলিয়াম গিলবার্টকে নিয়ে উপন্যাস ‘কুমারী রানির ডাক্তার’।
মৈত্রী রায় মৌলিকের জন্ম কলকাতায়। পেশায় ভূবিজ্ঞানী। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ভূবিজ্ঞানে বিএসসি। ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি, বম্বে থেকে এমএসসি ও এমটেক। বর্তমানে ফিল্ড জিয়োলজিস্ট হিসাবে কাজ করছেন। পরিবেশ বিজ্ঞানে গবেষণার কাজ করছেন নিউজার্সির রাটগার্স স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে। কর্মসূত্রে ভারতবর্ষের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরেছেন। গল্প, কবিতা রচনার পাশাপাশি অনুবাদ-কর্মে নিযুক্ত। মহাত্মা গাঁধী সর্বোদয়া মণ্ডল সংস্থা থেকে প্রকাশিত পুস্তক সেবাগ্রাম টু সোধগ্রাম বাংলা অনুবাদ করেছেন। তাঁর লেখা কবিতা, গল্প ও উপন্যাস সানন্দা, উনিশকুড়ি সহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া বিশিষ্ট কিছু লিটল ম্যাগাজিনের সঙ্গে যুক্ত।