চা বাগানে শ্রমিক আন্দোলন নৈমিত্তিক ব্যাপার। কিন্তু এবারের আন্দোলনে অনাবশ্যক ফেঁসে গেছেন ম্যানেজার আনিসুর রহমান। অভিযোগ মহুয়া নামের এক নারী শ্রমিককে তিনি ধর্ষণ করেছেন। গোপনে গর্ভপাত করাতে গিয়ে মহুয়ার জীবন বিপন্ন হলে রাতের আঁধারে পরিবারের লোক তাকে নীলেশ ডাক্তারের বাড়ি নিয়ে যায়। নীলেশ মিত্র হোপ ক্লিনিকের প্রসিদ্ধ ডাক্তার। শহর ছেড়ে কিছুটা স্বেচ্ছানির্বাসনে আছেন তিনি। চম্পাটিলা চা বাগানের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য মিশনারি চ্যারিটি কয়েকবছর ধরে ডিভাইন হোপ ক্লিনিক চালিয়ে যাচ্ছে।
বাগানের স্বার্থান্বেষী মহল ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য হোপ ক্লিনিক বন্ধের পায়তারা করছে। তাদের লক্ষ্য নীলেশ মিত্রকে থামিয়ে দেওয়া নয়তো নিজেদের দখলে নেওয়া।
পরপর কয়েক দফার অসন্তোষ আর আন্দোলন থামাতে বাগান মালিকের একমাত্র ছেলে তানভীর আজাদ চম্পাটিলা বাগানে ছদ্মপরিচয়ে এসেছে। লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত চা বাগান হাসপাতালের লোকসান থামাতে সে বদ্ধপরিকর। এ কাজে সাহায্যের জন্য সেও নীলেশকেই চায়।
বদলীর চাকরিতে পত্রলেখা ঘোষের পোস্টিং এবার মৌলভীবাজারের একটি উপজেলা হাসপাতালে। নীলাদ্রীকে নিয়ে তার ছোট্ট সংসার। একদিন হটাৎ করেই খুঁজে পাওয়া যায় না তাকে। প্রায়ই সে ছবির মতো সুন্দর ঝিরিবাড়িতে গিয়ে কারো সাথে সময় কাটায়। নীলাদ্রী হঠাৎ একদিন আবিষ্কার করে চা বাগানের একটা লোক হুবহু তার বাবার মতো দেখতে!
হোপ ক্লিনিকে সদ্য নিয়োগ পাওয়া ডাক্তার ইয়াসমীনের সাথে ক্লিনিকের পুরনো স্টাফ বীথির দ্বন্দ্ব শুরু হয় ব্যক্তিগত কারণে। বীথির সাথে পত্রলেখারও পুরনো হিসেব এবার না চাইতেও সামনে চলে আসে।
সম্পর্কের জটিল সমীকরণ থেকে কি সূত্র মেলাতে পারবে রাখাল, সৌমী, নীলাদ্রী কিংবা পত্রলেখা?
পাপিয়া দত্তের জন্ম ১৯৯০ সালের ৭ই জুন। স্বপন দত্ত, মীরা দত্ত দম্পতির প্রথম সন্তান তিনি। জনা এবং বেড়ে ওঠা মানিকগঞ্জের সিংগাইর খানায়। মা-বাবার ইচ্ছে ছিল মেয়েকে চিকিৎসক হিসেবে দেখার। সে সময় পাড়াগাঁয়ে থেকে মেয়েকে চিকিৎসক বানানোর স্বপ্নকে দুঃসাহস হিসেবে দেখা এতো। কোনোদিন দেখালোই করবেন তা স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি। পরিবারের কেউ লেখালেখির সাথে জড়িতও নয়। তবে বাড়িতে বাবার বইয়ের। এক বড়সড় লাইব্রেরি ছিল। বই পড়ার আগ্রহ সেখান থেকেই ডালপালা ছড়িয়েছে। ছোট থেকেই খুব বই পড়ার অভ্যেস। এখনও কাজের। ব্যস্ততার ফাঁকে সুযোগ পেলেই বইয়ে ডুবে থাকেন। বর্তমানে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন। ন্যাশনাল হেলথকেয়ার নেটওয়ার্কে। একমাত্র মেয়ের জন্মের পর মাতৃত্বকালীন ছুটিতে হঠাৎ করেই লেখালেখির কৌক তৈরী হয়। পেন্সিল। গ্রুপে নিয়মিত ধারাবাহিক গল্প লিখতে থাকেন একের পর এক। বেশ পাঠকপ্রিয়তা পায় লেখাগুলো। তারই জলশ্রুতিতে সমসাময়িক নারী লেখকদের। নিয়ে প্রকাশিত গল্প সংকলন 'নকশী কাঁথা'তে প্রথম ছাপার অক্ষরে তাঁর লেখা প্রকাশ পায়। ভালোবাসেন বই পড়তে, প্রিয়জনের সাথে সময়। কাটাতে, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন বুনতে।