শাঁখা তথা শঙ্খ বাংলার সমাজে প্রচলিত আচার-ব্যবহারে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ইতিহাস পড়ার সুবাদে আমরা জানি, সিন্ধু-সরস্বতী সভ্যতায় এর একাধিক নিদর্শন পাওয়া গেছে। কিন্তু উপমহাদেশের ওই রুক্ষ-শুষ্ক অঞ্চল থেকে বহুদূরে এই বাংলায় সেই আচার এল কীভাবে? এ কি শুধুই সমুদ্রবাণিজ্যের স্মারক এবং সেই সুবাদে সৌভাগ্যের চিহ্ন? নাকি এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অন্য কোনো ইতিহাস?
এই ধরনের নানা প্রশ্ন নানা সময় আমাদের মাথায় আসে। সেই প্রশ্নগুলোর থেকে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে কিছু প্রশ্ন আসে এমন একজনকে নিয়ে— যাঁর সঙ্গে পুরাণের বেশ কিছু অলৌকিক, অসম্ভব কীর্তি জড়িয়ে আছে। তিনি হলেন অগস্ত্য! তাঁর জন্ম থেকে শুরু করে পরিণতি— সবই রহস্যময়। কে তিনি? কী করেছিলেন তিনি?
আলোচ্য বইটি, যা একাধিক গবেষণাপত্রের সমাহার বললে কিছুমাত্র অত্যুক্তি হবে না, এই দুটি আপাতদৃষ্টিতে স্বতন্ত্র চিন্তার তন্তুকে ডাবল হেলিক্সের মতো করে মুখোমুখি এনেছে। সেই ডি.এন.এ-ই কি আমাদের প্রকৃত ইতিহাসের সন্ধান দেয়? সেই বিচারের আগে আমরা বরং দেখি, কী আছে এই বইয়ে।
'শুরুর কথা'-র পর এই বইয়ের যাবতীয় লেখাকে তিনটি অংশে ভাগ করা চলে। তারা হল~
(ক) সিন্ধু সভ্যতা:
১. সিন্ধু সভ্যতা ভ্রমণ;
২. সিন্ধু সভ্যতায় শাঁখা বানানোর পদ্ধতি;
৩. সিন্ধু সভ্যতায় শাঁখার ব্যবহার;
৪. বাংলার শাঁখার ইতিহাস ও ঐতিহ্য।
(খ) অগস্ত্য:
৫. শাঁখারিদের দেবতা অগস্ত্যের সন্ধানে;
৬. অগস্ত্যের রাজনৈতিক পরিচয়;
৭. পুরাণ ও তার প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্য;
৮. দ্বারকার খনন ও নিষ্পত্তি;
৯. দক্ষিণের আকাশে অগস্ত্য নক্ষত্রের উপস্থিতি।
(গ) পরিশিষ্ট:
ক] '৮৩-'৮৮ খননে হরপ্পায় শাঁখার নিদর্শন;
খ] সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত-কৃত অনুবাদে তরু দত্তের 'যোগাদ্যা উমা';
গ] সপ্তর্ষিদের পরিচয়;
ঘ] সঙ্গম সাহিত্য থেকে ভেলি রাজাদের নাম;
ঙ] পোদুকোট্টাই রাজ্যের কুদুম্বালুর শিলালেখ;
চ] সিন্ধু সভ্যতায় শঙ্খ থেকে বানানো বিভিন্ন অলংকার ও অন্য বস্তু।
এরপর এসেছে 'পরিভাষা' ও 'তথ্যসূচি'।