পৃথিবীতে মহান আল্লাহ তায়া’লা সমস্ত কিছু সৃষ্টি করে তার একটি নির্দিষ্ট সময়কাল বেঁধে দিয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়কাল অতিক্রম হলেই তার অবসান অবশ্যই ঘটবে, এটাই স্বাভাবিক। এতে কোনো সন্দেহ নাই। কারণ, পৃথিবী ও পৃথিবীর যাবতীয় উদ্ভিদ, জীবজন্তু ও প্রাণিকুল সব কিছুই নশ্বর। কোনো কিছুই অবিনশ্বর নয়। এতে সে যতই শক্তিশালী, ঝড় তুফান, সাইক্লোন, হিংস্র প্রাণী অথবা মানুষ, যেই হোক না কেন। সবাইকে তার এই পৃথিবীর নির্দিষ্ট স্থান, মায়া মমতা, স্নেহ ভালোবাসার সকল বন্ধন ছেড়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে চলে যেতে হবে চিরতরে পরপারে কর্মফল সাথে নিয়ে।
এরই মাঝে মানুষকে রূপ যৌবন, ধন সম্পদ, ঐশ্বর্য প্রাচুর্য, শক্তি ও ক্ষমতা দিয়েছেন এবং ভালো মন্দ, ন্যায় অন্যায়, হালাল হারাম নির্বাচন করে জীবনকে সুন্দর ও অসুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য দিয়েছেন অমূল্য অনুভূতি শক্তি বিবেক, মনুষ্যত্ব। মনুষ্যত্ব ও বিবেকহীন ব্যক্তি কখনোই প্রকৃত মানুষ হতে পারে না। সে হয় চতুষ্পদ জন্তুর থেকেও অধম। আর এই বিবেকের দ্বারাই মানুষ শয়তানের পথে ও দ্বীন ইসলামের পথে ( উভয় পথেই) নিজেকে ও তার পরিবারবর্গকে পরিচালনা করতে পারে।
অনেক দিন আগের কথা। এক গ্রামে বাস করতো ধনাঢ্য শক্তিশালী এক ব্যক্তি তার নাম ছিলো জাহিদ। দেখতেও ছিলো খুব সুন্দর, সুদর্শন। যে কোনো মেয়ে তার দিকে তাকালেই তার প্রেমে পড়ে যেতো। তার কোনো কিছুর অভাব ছিলো না। শিক্ষা দীক্ষাতেও ছিলো অনেক শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী গুণী ব্যক্তিদের শ্রেষ্ঠতম একজন। সে সব কিছুই জানতো, কিন্তু মানতো না। সে নিজেকে ভাবতো অমর। তার এত ধন সম্পদ কোনদিন কখনোই শেষ হবে না। তাই সে খুব গর্ববোধ ও অহংবোধে চলতো। তার স্ত্রী সখিনা ও ছিলো খুব অপরূপ সুন্দরী। তার কাছে যেন পূর্নিমার চাঁদও হার মেনে যেতো। কণ্ঠে ছিলো সুমধুর কোকিলের সুর। কিন্তু সে ছিলো খুব ধার্মিক ও ধর্মপরায়ণ। তার কোরআন তিলাওয়াত শুনে সকলের মন ভরে যেতো। তাদের ছিলো তিনটি সন্তান। প্রথম সন্তান মেয়ে আকলিমা, দ্বিতীয় সন্তান মেয়ে তাহমিনা এবং তৃতীয় সন্তান ছেলে নাহিদ। এ যেন এক সোনার সুখের সংসার। কিন্তু এতেও জাহিদের মন ভরতো না। সে ছিলো মাদকাসক্ত, নারী লোভী, পরকীয়ার প্রণয় এবং খুব অত্যাচারী। বাড়ির চাকরদের সাথেও খুব খারাপ ব্যবহার করতো। কথায় কথায় গালি ও প্রহার করতো। তার স্ত্রী সখিনা এর প্রতিবাদ করলে তাকেও অকথ্য ভাষায় কথা বলতো। এমনকি প্রহারও করতো।
তার এমন আচরণে সখিনা খুব কান্নাকাটি করতো। প্রভুর দ্বারে দু'হাত তুলে মোনাজাতে বলতো, ইয়া আল্লাহ! তুমি আমার স্বামীকে তোমার দ্বীনের পথে কবুল করো। তাকে মানবিক জ্ঞান ও বিবেক বুদ্ধি প্রদান করো। তাকে মানব জাতির কল্যাণে কবুল করে নাও — আমিন।
পরিচিতিঃ মোঃ ইব্রাহিম হোসেন জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ২৮-১০-১৯৬৯ সালে রাজশাহী জেলায় গোদাগাড়ী উপজেলার হরিশংকরপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমান স্থায়ী বসবাস কাদিপুর, ভাটোপাড়া, গোদাগাড়ী, রাজশাহী। তাঁর বাবা একজন সৎ সাহসী পরহেজগার ব্যক্তি ছিলেন। কিন্তু ভাগ্যক্রমে তিনি তাঁর বাবার সমস্ত সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হোন এবং খুব ছোট বেলাতেই বাবাকে হারিয়ে ফেলেন। ফলে সংসারে দুঃখ নেমে আসে এবং অতি কষ্টে অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে তিলেতিলে হাতে খড়ি পড়ে। তিনি সততার সাথে খুব সহজ-সরলভাবে জীবন-যাপন করেন। তিনি ১৯৯৯ সালের ৬ -ই আগস্ট রোজ শুক্রবার মোসাঃ নুরমহল খাতুনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন। ছাত্রজীবন শৈশব থেকেই তাঁর লেখালেখির সূত্রপাত হয়। তিনি তিন হাজারেরও অধিক ছড়া-কবিতা ছন্দ মাত্রায় লিখেছেন। তাঁর লিখিত গল্প "আলোর পথের যাত্রী", দুখিনী মা "মিষ্টি প্রেমের ছোঁয়া"। উপন্যাসঃ 'ইতি কথা', 'অভিলাষী মন' ও 'ভালোবাসার রঙ' বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাঁর যৌথ, সংকলন এবং একক কাব্যগ্রন্থ ও উপন্যাস মিলে প্রায় বেশ কিছু কাব্যগ্রন্থ প্রাকাশিত হয়। তিনি 'মিষ্টি প্রেমের ছোঁয়া', 'জান্নাতের ফুল', 'স্বর্গে ফোটা ফুল', 'বিদ্রোহী কন্যা', 'রূপসী পল্লী', 'মদিনার ফুল', 'বাবা মানে বৃক্ষ ছায়া', ও 'রক্তাক্ত কারবালা' সহ আরও কিছু যৌথ কাব্যগ্রন্থও নিজেই সম্পাদনা করেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম একক কাব্যগ্রন্থ 'প্রেমের সম্ভাষণ' (২০২২ ফেব্রুয়ারি )। 'ইতি কথা' (উপন্যাস,জানুয়ারি ২০২৩) এবং 'বৈচিত্র্যময় জীবন' (কাব্য,নভেম্বর ২০২৩) 'মমতাময়ী মা জননী' (কাব্য, অক্টোবর ২০২৪) 'অভিলাষী মন' (উপন্যাস) ও উদ্দীপ্ত চেতনা - (কাব্য) সেপ্টেম্বর ২০২৪ এবং 'ভালোবাসার রঙ' (উপন্যাস) ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এ প্রকাশিত হয়। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠন কর্তৃক বহু সম্মাননা সনদ প্রাপ্ত হোন। আমরা কবির সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করি।