সময়ের গতিময়তায় পরিবর্তিত বিশ্ব। আজকের ভারত-পাকিস্তান-নেপাল অনেক বেশি আলাদা। সেই ১৯৯৯ সাল থেকে তো বটেই। সেই সালের পর ভারতে গিয়েছি কিন্তু পাকিস্তান-নেপালে আর যাওয়া হয়নি। তখনকার সময়ে দেখা দৃশ্যপট আজ হয়তো অনেকটাই বদলেছে। তাই এই ভ্রমণকাহিনি পড়ে অনেকেই হয়তো কিছুটা অমিল পেতেই পারেন। কোনো কোনো বিষয়ে ভিন্নমত আসতেই পারে। আরেকটা বিষয় তখনকার সময়ে আমি ছিলাম অপরিপক্ক একজন ছেলেমানুষ মাত্র। আমার দৃষ্টিভঙ্গি ততটা পরিণত ছিল না মোটেও। এই ভ্রমণকাহিনি সম্পূর্ণ ডায়েরি নির্ভর, স্মৃতিচারণমূলক। তাই আমার এই ভ্রমণের সহযাত্রী হয়ে নিজেকে সেই সময়ের, সেই বয়সের একজন হয়ে যেতে পারলে গল্পটা উপভোগ্য হতে পারে, নতুবা নয়। আমার সেই ভ্রমণের বন্ধুরা আজ অনেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। আজ অনেকেরই সাথে যোগাযোগ রাখা সম্ভব হয়নি। তবুও তাঁদের আজও স্মরণ করি। আজকের ভারত অনেক এগিয়ে। যেমন আইটি সেক্টরের কথা তো বলাই যায়। আর পাকিস্তানে তখনও বরাবরই ছিল সামরিক শাসন। তখন ওদের অর্থনীতি এখনকার তুলনায় ভালো ছিল। আমরা নেপাল থেকে আসার পর ওখানে তো একবার ভ‚মিকম্প হয়েছে। সব কিছু ছাপিয়ে সেই সময়ের তুলনায় এখনকার প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণই হয়তো ভিন্ন। তবুও পাঠকবৃন্দকে আমি আমার সেই স্মৃতিময় ভ্রমণের সহযাত্রী করার প্রয়াসে এই ভ্রমণকাহিনিটি লেখার চেষ্টা করেছি। আশা করছি পাঠকের আনন্দদানে সক্ষম হবে। প্রথমবারের মতো আমার এই ভ্রমণকাহিনি। আমি এ পর্যন্ত মোটামুটি আটটি দেশ ঘুরেছি। সবগুলো ভ্রমণের মাঝে এটিই অনন্য। কেননা, এই ভ্রমণে সঙ্গী হয়েছিল আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের কতিপয় সহপাঠী, শিক্ষক ও প্রাণের কিছু বন্ধুবর।
নাজনীন শুভ্র জন্মগ্রহণ করেন ১৯৭৪ সালের ১লা আষাঢ় ঢাকায়। তার পিতা মেজবাহ উদ্দিন জওহের একজন খ্যাতিমান লেখক ছিলেন। অল্প বয়সে মাতৃহারা নাজনীন শুভ্র বাবার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বেড়ে উঠেন। বাবার উৎসাহে তার লেখালেখির শুরু। তার প্রথম কবিতা ‘একুশের প্রত্যয়’ কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় কলেজের পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। পরবর্তীতে গল্প, উপন্যাস রচনায় নিমগ্ন হন। এ যাবৎ প্রকাশিত হয়েছে ১৩টি গ্রন্থ।
১৯৮৯ সালে তিনি সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি এবং ১৯৯১ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এইচএসসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল হতে আইনজীবী সনদপ্রাপ্ত হন। তিন বছর আইন পেশায় তিনি মন লাগাতে পারেননি। পরবর্তীতে পেশা বদল করে ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট পরী¶ার মাধ্যমে ২০০১ সালে রূপালী ব্যাংক লিমিটেডে সিনিয়ার অফিসার পদে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি রূপালী ব্যাংক লিমিটেড-এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন।