জানুয়ারি, ১৯৭২ সন। দেশ স্বাধীন হবার পর সবকিছু এখন নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে। টুলুর কলেজের ক্লাসও শুরু হয়ে গেছে। সে কলেজে ভর্তি হবার পর অনেকটা সময় চলে গেছে লেখাপড়া ছাড়াই। তার ক্লাস হয়েছে বলতে গেলে খুব অল্প কিছু সময়। কারণ, প্রথমে কিছুদিন এগারো দফা ছাত্র আন্দোলন ও গণ আন্দোলনের জন্য সারা দেশেই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্লাস হয়নি। তারপর হলো পাকিস্তানের প্রথম গণভোট। তারপর শুরু হলো অসহযোগ আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর দেশ স্বাধীন হলো। জন্ম হলো লাল-সবুজ পতাকার দেশ বাংলাদেশের।
এখন দেশের সকল মানুষ, ছাত্র-জনতা সবাই আনন্দের জোয়ারে ভাসছে। সবার প্রাণে এখন হাসিখুশি আর আনন্দ। টুলুর কলেজের ছাত্র-শিক্ষকদেরও তাই। কিন্তু টুলুর মুখে হাসি নেই। তার মনে কোনো আনন্দ নেই। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস তার জীবনের উপর দিয়ে একটা ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেছে। সে দুঃসহ মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করেছে। শরীরিকভাবে নির্যাতিত হয়েছে। তার প্রাণপ্রিয় ছোটোভাই দুলুকে সে হারিয়েছে।