বর্ষৈক পরে আজি আমি স্পেনগর্ব্বভূমি মহাকবি সারভেনটিসের পদাশ্রয় গ্রহণ করিয়া, পুনরায় বঙ্গীয় সাহিত্যসমাজে অবতীর্ণ হইলাম। অদৃষ্টের কথা কে বলিতে পারে; হয়ত, আমার এই লেখনীর অঘাতে মহাকবির সুরঞ্জিত চারুচিত্র এককালে ছিন্ন ভিন্ন হইবে হয়ত বঙ্গের চক্ষে তদীয় অলোকসাধারণগুণসন্নিপাত - দোষরাশিতে পরিণত হইবে-হয়ত তাঁহার সুবিমল কীর্ত্তিকুসুম মলিন ও বিশুষ্ক হইয়া, নিয়তির অন্তস্তল স্পর্শ করিবে- হয়ত মহাকবির চিরঞ্জীবিনী প্রতিভা কল্পনাসাগর মন্থন করিয়া, যে দেবদুর্লভ অপূর্ব্ব দিব্যপদার্থ সৃজন করিয়াছিল,
মদীয় পাপ লেখনী সংস্পর্শে তাহাই রূপান্তরে উদগত হইয়া, বঙ্গালয়ে বিরাগ ও অসন্তোষ ভাজন হইবে! যদি বিদ্যাসাগর মহাশয়, কি তারাশঙ্কর বাবু, কি আধুনিক নবন্যাস পথপ্রদর্শক বঙ্কিম বাবু, কি তদপেক্ষা বিদ্যাবুদ্ধিসম্পন্ন আর কোনও মহাত্মা, এই গুরুকার্য্যে অগ্রসর হইতেন, যদি তাঁহারাই সারভেন্টিনেন্সর প্রচণ্ড প্রতিভাবেগ ধারণ করিবার নিমিত্ত, আজি বঙ্গসমাজে হৃদয় পাতিয়া দণ্ডায়মান হইতেন, অথবা যদি আজি তাঁহাদিগের সদৃশ কোনও মহাত্মা সেই চিত্র অনুরঞ্জন করিবার ভার গ্রহণ করিতেন, তাহা হইলে বলিতে পারিতাম, অবিকল না হউক, সে বিচিত্র চিত্রের সমগ্র ছায়াও চিত্রিত হইয়াছে।