মানুষের মধ্যেকার দীর্ঘদিনের যুদ্ধ আর দ্বন্দ্বে পৃথিবী আজ বসবাসের অযােগ্য হয়ে পড়েছে। যে কোনাে সময় ধ্বংস হয়ে যেতে পারে পৃথিবী। তাইতাে অভিযাত্রীরা বসবাসযােগ্য নতুন আর একটি গ্রহের সন্ধানে ছুটে বেড়াচ্ছেন গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে, মহাবিশ্বের দূর-দূরান্তে। ঐ। নতুন গ্রহটি হবে দ্বিতীয় পৃথিবী যেখানে বর্তমান পৃথিবীর মানুষদের স্থানান্তর করে রক্ষা করা হবে মানব সভ্যতাকে। এরকম অনুসন্ধান অভিযানের এক পর্যায়ে চব্বিশ বছর বয়সী নারী অভিযাত্রী নিয়ান এসে পড়ে লিলিলি নামের অজানা এক গ্রহে। দুর্ভাগ্যবশত লিলিলি গ্রহে অবতরণমাত্র তাকে ঘিরে ফেলে লিলিলি গ্রহের অতি বুদ্ধিমান প্রাণী হিরিরা। লিওলি নামের একটি পুরুষ হিরি তখন ধীরে ধীরে প্রবেশ করতে থাকে নিয়ানার শরীরের মধ্যে। নিয়ানা একসময় অনুভব করে লিওলি সত্যি তার শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে তার মস্তিষ্কের সকল স্মৃতি পড়ে নিচ্ছে। একসময় হিরিরা জেনে যায় নিয়ানা মানুষের জন্য লিলিলি গ্রহ দখল করতে এসেছে। লিওলির পর তখন দিওপি নামের আর এক হিরি প্রবেশ করে নিয়ানার মস্তিষ্কে। এবার তীব্র যন্ত্রণায় চিক্কার করে ওঠে নিয়ানা। সে অনুভব করতে থাকে ভয়ঙ্কর ইলেকট্রিক শক তার শরীরে তীব্র কম্পন সৃষ্টি করে যাচ্ছে। সে বাঁচার জন্য চিৎকার করে ওঠে। কিন্তু কে তাকে সাহায্য করবে নিঃসঙ্গ ঐ লিলিলি গ্রহে? শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছিল অভিযাত্রী নিয়ানার জীবনে? সত্যি কি পৃথিবীর মানুষ বসতি স্থাপন করতে পেরেছিল লিলিলি গ্রহে? নাকি তাদের দ্বিতীয় পৃথিবীর স্বপ্ন চিরতরে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল মহাকাশের নিকষ কালাে অন্ধকারে?
লেখক মোশতাক আহমেদ এর জন্ম ১৯৭৫ সালেল ৩০ ডিসেম্বর, ফরিদপুর জেলায়। তিনি ঢাকা ভার্সিটির ফার্মেসী বিভাগ হতে মাষ্টার্স এবং আইবিএ হতে এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের লেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে ক্রিমিনোলজিতে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি সাহিত্যপ্রেমী, লেখালেখির প্রতি আগ্রহ আকাশচুম্বী। তার প্রথম উপন্যাস জকি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। সায়েন্স ফিকশন লেখক হিসেবে সুপরিচিত হলেও নিয়মিত গোয়েন্দা, ভৌতিক, প্যারাসাইকোলজি, মুক্তিযুদ্ধ, কিশোর ও ভ্রমণ উপন্যাসও লিখে চলেছেন। বিভিন্ন জনরায় লেখালেখির জন্য বহুমাত্রিক লেখক হিসেবেও তিনি সর্বজনবিদিত। তার রচিত উপন্যাসের সংখ্যা শতাধিক। বাংলাসাহিত্যে অনবদ্য অবদানের জন্য তিনি ২০১৭ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া তিনি কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, চ্যানেল আই সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরুস্কারও লাভ করেন।