স্বাধীনতার ফুল ফুটেছে বিপ্লবীদের হাতে- এই নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে এক রক্তমাখা প্রত্যয়ের উন্মেষ, এক জাগ্রত সাহসের সম্ভাবনা। এই কাব্যগ্রন্থ কেবল শব্দের সজ্জা নয়; এটি সময়ের সাক্ষ্য, সমাজের প্রতিবিম্ব এবং ভবিষ্যতের প্রতি এক গভীর দায়বদ্ধতার প্রকাশ।
যে সময়ের ভেতর দিয়ে আমরা হেঁটে এসেছি, তার প্রতিটি বাঁকে ছিল দ্রোহ, প্রত্যাশা ও প্রতিরোধের অদৃশ্য আলপথ। ছাত্রদের সংগঠিত বিপ্লব, যা দেশের ইতিহাসে নতুন আলোকধারা ছড়িয়ে দিয়েছে, তা আর শুধু সংবাদপত্রের শিরোনামে সীমাবদ্ধ নয়- তা কবিতার মর্মসন্ধানেও প্রবেশ করেছে। কবি সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে নির্জনে উচ্চারণ করেন: “বিবেকের তাড়নায় হৃদয়ে রক্তক্ষরণ নিয়ে লিখতে হয়েছে”। এই উচ্চারণ ব্যক্তিগত নয়, বরং একটি প্রজন্মের পক্ষে কবির স্পষ্ট অবস্থান।
এই কাব্যগ্রন্থের গঠনে রয়েছে শিল্প ও আদর্শের সংমিশ্রণ। এখানে গদ্যকবিতা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে ছন্দবদ্ধ পদ্য। কিশোরদের জন্য যেমন সাহস জোগানো কবিতা লেখা হয়েছে, তেমনি শিশুমনে স্বপ্নের বীজ বপনের মতো ছড়াও আছে। এটি একক কণ্ঠস্বর নয়, বরং একটি বহুস্বরিক সঙ্গীত, যেখানে একইসাথে প্রতিবাদ, প্রেম, স্বপ্ন ও ভবিষ্যতের আহ্বান ধ্বনিত হয়েছে।
কাব্যগ্রন্থটির নাম যেমন সর্বতোষ- সবার জন্য গ্রহণযোগ্য, তেমনি এর বিষয়বস্তুও বহুমাত্রিক। যাপিত জীবনের বাইরে এসে এক সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে কবি তার কলম ধরেছেন। কাব্যসাহিত্য যে সময়ের সাক্ষী হতে পারে, এবং ভবিষ্যতের নাবিকদের দিশা দিতে পারে, তার এক জীবন্ত উদাহরণ এই গ্রন্থ।
আমরা আশা করি, ‘স্বাধীনতার ফুল ফুটেছে বিপ্লবীদের হাতে’ কেবল এই সময়ের পাঠককেই নয়, বরং আগামী প্রজন্মের মননেও রেখাপাত করবে। কবিতার ভাষায় তারা খুঁজে পাবে ইতিহাস, প্রতিরোধ এবং আলোচকালের সেই অনির্বাণ দীপ্তি- যা সত্য ও স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলে।
জানে আলম বাংলা সাহিত্যে শুদ্ধা চিন্তার কবি হিসেবে পরিচিত। কবিতা লেখার পাশাপাশি তিনি ছড়া এবং শিশু কিশোর গল্পও লিখেছেন।তার ছড়া ও গল্পগুলো উপদেশ মূলকশিশুদের জন্য শিক্ষণীয়। মহৎ সাহিত্য রচনার কাজে তিনি নিবেদিত। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ -নৈশব্দের কাছে যাবো, মেশকের মায়াবী ঘ্রাণ, কতোকাল আর ভালো থাকা,গোপনে কাঁদো গোপনেই মুছে ফেলো অশ্রু, আল্লাহর কাছে সব বলে দেবো। ছড়া গ্রন্থ -শুভেচ্ছা নাও সবুজ পাতা,সুখে থাকো বৃক্ষ আমার,মায়ার বাড়ী ইস্টিশন, বৃষ্টি ঝরে সুরে সুরে, আগুন ঝরা ফাগুন ছড়া, ছড়া শুধু কথা ছড়ায় গল্পগ্রন্থ -পাখির জন্য ভালোবাসা,আব্বু তুমি ভেরিগুড, আমার আছে দোয়েল কোকিল, সূতাকাটা ঘুরি। ফুলের হাসি ভালোবাসি।ইত্যাদি। তিনি শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন।