ষোড়শ শতকের শেষ ও সপ্তদশ শতকের শুরুর সময়টা বাংলার ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তখন উত্তর ভারতে যেমন রাজত্ব করছিলেন বাদশা আকবর ও তারপরে জাহাঙ্গির। তেমনই বাংলায় মোগল আধিপত্যকে নস্যাৎ করে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিলেন বারো ভুঁইয়ারা। বাংলার দক্ষিণে ভাটি প্রদেশে যশোর রাজ্য ছিল সেই বারো ভুঁইয়াদের রাজত্বের মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য এক রাজ্য। যশোরের তখনকার শাসক ছিলেন মহারাজ প্রতাপাদিত্য। ক্রীতদাসের বাজার, জলদস্যুদের তাণ্ডব আর যুদ্ধবিগ্রহের মধ্যে সে ছিল এক উত্তাল সময়। এই কাহিনি সেই সময়কার। এ সময়ে উষ্ণীষ এক আশ্চর্য চরিত্র। সে ও তার গুরু মহাময় মুখোপাধ্যায় এই যশোর রাজ্যের রাজা প্রতাপাদিত্যকে নানা বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে। কখনও সে লড়াই করে দুর্ধর্ষ জলদস্যু দাভির সঙ্গে! আবার কখনও তার লড়াই খোদ বাংলার তৎকালীন মোগল শাসক ইসলাম খাঁয়ের সঙ্গে। কখনও সে শত্রু দমন করতে চড়াও হয় জলদস্যুদের জাহাজে আবার কখনও মহারাজ প্রতাপাদিত্য ও তাঁর পরিবার-পরিজনকে বাঁচাতে সে সোজা ঢুকে যায় মোগল শিবিরের মধ্যেই! আর এই কাজে তাকে যোগ্য সঙ্গত করে তার গুরু মহাময় ও বন্ধু হাসান। ‘উষ্ণীষ’ গ্রন্থের এই দুটি উপন্যাস, জলদস্যু, যুদ্ধ, উদ্ধারকাজ এবং বুদ্ধিদীপ্ত ঘটনায় জমজমাট রোমহর্ষক কাহিনি। এর প্রতি পরতে মিশে রয়েছে চমক, রয়েছে উত্তেজনা, ‘কী হয় , কী হয়’ ভাব! আর রয়েছে বাংলার হারিয়ে যাওয়া গৌরবের কথা। এ ছাড়াও উষ্ণীষের কাহিনি সেই সব মানুষেরও গল্প যারা বিপদের মুখে বা ক্ষমতার সামনে মাথা নত করে না। যারা সৎ, সংযমী এবং পরোপকারী। ‘উষ্ণীষ’ স্বাদু গদ্যে লেখা ঐতিহাসিক থ্রিলার।
জন্ম ১৯ জুন,১৯৭৬ কলকাতায়। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। তিনি পৈতৃক ব্যাবসার সঙ্গে যুক্ত আছেন। স্মরণজিৎ চক্রবর্তী নঙ্গী হাইস্কুল থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক পাশ করে ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি হন। কিন্তু কিছুদিন পর পড়া ছেড়ে দেন। তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতক হন। স্মরণজিৎ চক্রবর্তী বর্তমান বাংলা সাহিত্যের এক উল্লেখযোগ্য লেখক। তরুণ তরুণীদের মধ্যে তিনি ভীষণ জনপ্রিয়। কবিতা দিয়ে তাঁর লেখালিখির শুরু। প্রথম ছোটগল্প প্রকাশিত হয় 'উনিশ কুড়ি' পত্রিকার প্রথম সংখ্যায়। প্রথম উপন্যাস 'পাতাঝরার মরশুমে'। তাঁর সৃষ্ট এক অনবদ্য চরিত্র অদম্য সেন। তাঁর শখ বলতে কবিতা, বই, মুভিজ আর ফুটবল।