মাহফুজা হাসান মাজহার একজন একনিষ্ঠ ও অনুভবপ্রবণ কথাসাহিত্যিক, যিনি
লেখালেখিকে দেখেন আত্মসন্তুষ্টির আশ্রয় আর সৃষ্টিসুখের নির্ভরযোগ্য পথ হিসেবে। নাম,
ধাম, জন্ম তারিখের আনুষ্ঠানিক পরিচয়ের বাইরে তিনি নিজেকে চিনতে ভালোবাসেন
একজন লেখিকা হিসেবে—যিনি লেখেন নিজের জন্য, আবার পাঠকের সঙ্গে আনন্দ ও
আবেগ ভাগ করে নিতেও।
রাজশাহীতে বেড়ে ওঠা মাহফুজা হাসানের শিক্ষাজীবন কেটেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
কর্মজীবন, সংসার এবং স্বপ্নের জগৎ—সবই তাঁর প্রিয় শহর রাজশাহীকেন্দ্রিক। লেখার
পাশাপাশি তিনি একজন পরিভ্রমণপ্রেমী; পাহাড়, সমুদ্র, নদীর টানে ব্যাগ পিঠে বেরিয়ে
পড়েন পরিবারসহ—প্রকৃতির সান্নিধ্যে খুঁজে পান নতুন অনুভব, যা ফিরে এসে প্রতিফলিত
হয় তাঁর সাহিত্যে। অবসর সময়ে তাঁর সঙ্গী কাগজ ও কলম, আর মনোযোগ নিবদ্ধ থাকে
চরিত্র ও কাহিনির গহিন নির্মাণে।
২০২০ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘অভিমানী নন্দিনী বধূয়া’
প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটিতে প্রিয়ম ও দিবার সম্পর্কের জটিল আবেগ, বিচ্ছেদ ও
পুনর্মিলনের মধ্য দিয়ে জীবনের গভীর সত্যগুলো উন্মোচিত হয়েছে—যেখানে
ভালোবাসার জয় আসে আত্মত্যাগের বিনিময়ে।
তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস ‘অতঃপর ভালোবাসা’-য় উঠে এসেছে আহিল ও আয়েশার
সম্পর্কের টানাপোড়েন ও শেষ পর্যন্ত মহামিলন। গল্পটি পাঠকের হৃদয়ে আনন্দ-বেদনার
সুরে দোলা দিয়ে যায়, সৃষ্টি করে এক বাস্তবভিত্তিক কিন্তু স্বপ্নমগ্ন আবহ।
সাহিত্য তাঁর কাছে নিছক পেশা নয়—এ যেন আত্মা থেকে উৎসারিত এক নিরবিচার
আত্মকথন। তাঁর ভাষা কোমল, কিন্তু গভীর; তাঁর চরিত্ররা জ্যান্ত, তবু স্বপ্নমগ্ন। এই দুইয়ের
মিশ্রণে মাহফুজা হাসান মাজহার হয়ে উঠেছেন আমাদের সময়ের একজন উল্লেখযোগ্য
কথাসাহিত্যিক।