কবি ও কথাসাহিত্যিক সৈয়দা আয়েশা সিদ্দিকা আহমেদ ১৯৫৩ খ্রিঃ ২৩ মার্চ লাখাই উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সৈয়দ আজিজুর রহমান, মাতা সালেহা বেগম চৌধুরী। বৈবাহিক সূত্রে তিনি নবীগঞ্জের বাসিন্দা। ১৯৬৮ খ্রিঃ তিনি নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুর পরগনার ঐতিহ্যবাহী সাতাইহাল গ্রামের কমর উদ্দিন আহমেদের পুত্র ব্রিটেন প্রবাসী শামসুদ্দীন আহমেদ এমবিই-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
কবি আয়েশা আহমেদ'র পিতা সৈয়দ আজিজুর রহমান পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় চাকরির বদলির সুবাদে আজমিরিগঞ্জ, কুলাউড়া, বাহুবল ইত্যাদি জায়গার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে তিনি অধ্যয়ন করেন। হবিগঞ্জ বিকেজেসি স্কুল থেকে ১৯৬৮ খ্রি. তিনি এসএসসি পাশ করেন। পরবর্তী চার বছর হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারী কলেজে অধ্যয়ন করে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন।
মাত্র ১১ বছর বয়সেই তিনি সাহিত্য চর্চায় মনোনিবেশ করেন। সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়ন কালীন "আজাদ পত্রিকায়" তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। এরপর তিনি আজাদ, বেগম, ললনা প্রভৃতি পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন।
১৯৭২ খ্রি. তিনি স্বামীর সঙ্গে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ব্রিটেনে গমন করেন। পরবর্তীতে চ্যাস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। ২০০৪ খ্রি. তিনি চ্যাস্টার সিটি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে প্রথম বাঙালি মহিলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। চ্যাস্টার লিটারেচার ফেস্টিভ্যালে প্রতিবছর তিনি আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে ইংরেজি অনুবাদসহ স্বরচিত কবিতাও আবৃত্তি করেন। ২০২৩ সালে তিনি 'চলতে চলতে' উপন্যাসের জন্য 'ছফিনা নূর-শব্দকথা সাহিত্য পুরস্কার'-এ ভূষিত হন।
তিনি ব্রিটেনের বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে লেখালেখি করেন। কবিতা আর উপন্যাস মিলিয়ে গ্রন্থাকারে এ যাবত তাঁর ১০টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
১। তৃষিত অরুনিমা (কবিতা),
২। শেষ বিকেলের কবিতা (কবিতা),
৩। জ্যোৎস্নায় বাজে সুর (কবিতা),
৪। এ টাচ অব ডাস্ক (ইংরেজি কবিতা),
৫। পায়ে পায়ে প্রহর (উপন্যাস),
৬। পৃথিবী রং বদলায় (উপন্যাস),
৭। সায়ন্তের গোধূলি (উপন্যাস),
৮। চলতে চলতে (উপন্যাস),
৯। জীবনের গল্প (উপন্যাস),
১০। তমসা ঘেরা পথ (উপন্যাস)।
সংসার জীবনে তিনি তিন পুত্র সন্তানের জননী। পুত্র রুহুল আমিন আহমেদ (সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার সাউদার্ন আয়ারল্যান্ড), নুরুল মোমিন আহমেদ (রুবেল) বার্সেলোনা ইউনিভার্সিটির ইংরেজির অধ্যাপক, তারিক জামিল আহমেদ (ব্যবসায়ী, ব্রিটেন)।
তাঁর স্বামী শামসুদ্দীন আহমেদ কমিউনিটি ওয়ার্কের জন্য ব্রিটেনের রাণী কর্তৃক এমবিই খেতাবে ভূষিত হন।