সে জন্মেছিল দার্জিলিং জেলার সমতলে তরাইয়ের এক চা-বাগিচায়। নাম, পাহাড়গুমিয়া টি এস্টেট। তার বাবা ছিলেন সেখানে বাঙালি কর্মচারীদের মধ্যে প্রধান। তাঁকে বলা হত বড়োবাবু। শৈশবের কতকগুলো ছবি সে মনের পটে দেখতে পায়। একটা টিনের চালের পাকা বাড়ি, তার মধ্যে তিনটে বড়ো-বড়ো ঘর। শেষের ঘরটা তুলনায় ছোটো এবং সবচেয়ে শৌখিন। বড়ো-বড়ো কাচের জানলা, দুটো ঢাউস বেতের ইজিচেয়ার, কয়েকটা বইয়ের আলমারি এবং পালঙ্কে ধবধবে বিছানা।br সেটাই তার বাবার নিজস্ব ঘর। সামনে টানা চওড়া বারান্দা। বারান্দায় তিন-চারটে হাতল- দেওয়া রংবিবর্জিত চেয়ার এবং পিঠে হেলান দেবার ব্যবস্থাসুদ্ধ বেঞ্চ, তাতে আরও জনচারেক মানুষ স্বচ্ছন্দে বসতে পারে। সামনে একটা ঘাসে ঢাকা মাঠ, ছেলেবেলায় সেই মাঠকে তার যথেষ্ট বড়ো মনে হত। সেই মাঠের থেকে বাড়িটার মুখোমুখি দাঁড়ালে, বাঁ হাতে, মনে হয় ছিল, একটা তারকাঁটায় ঘেরা ছোটো ফুল বাগান। সেই বাগানে টগর, বেলি, জবা, বকুল ফুলের গাছ। বেলিফুলের মৃদু সুবাস জানলা দিয়ে মা'র ও তাদের ঘরে চলে আসত। সেই শৈশব থেকেই বেলি তার খুব প্রিয় ফুল।