বসন্ত কাল। যতদূর দৃষ্টি যায় কেবল সবুজের সমারোহ। ডান দিকে দৃষ্টির শেষ সীমানা পর্যন্ত সবুজ ক্ষেত খামার। বাতাসে নাচছে গমের শীষ। বায়ে ফোরাতের পারে লতাগুল্ম ঘেরা গভীর অরণ্য। হাসান প্রবেশ করল এ এলাকায়। দিগন্ত জুড়ে গোধূলির সোনালী আলো মেঘের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে। বৃক্ষের ছায়ারা দ্রুত সরে যাচ্ছে পূর্ব দিকে। নীড়ে ফিরছে পাখীর ঝাঁক। কৃষক আর রাখালদের বস্তি থেকে ধোঁয়ার হালকা ছায়া এঁকেবেঁকে উঠে যাচ্ছে আকাশের দিকে। এলাকায় পা দিতেই অনেক স্মৃতি ও আবেগ এসে ভীড় করল হাসানের মনে। এ মাটির ছায়াঘেরা বৃক্ষের নীচে দাঁড়িয়েই ও একদিন শুনতো পাখীদের গান। হতাশার পরিবর্তে তার চেহারায় থাকতো আশা ও আনন্দের অনাবিল হাসি। সেসব স্মৃতি মনে পড়তেই কেন যেন গম্ভীর হয়ে গেল ও।
ধীরে পায়ে এগিয়ে চলল হাসান। বয়স পঁচিশের কোঠায়। পরণে পুরোনো মলিন পোশাক। তবে চেহারায় তার কোন ছাপ নেই, বরং সেখানে খেলা করছে এমন এক কমনীয়তা ও গাম্ভীর্য, হাজার মানুষের ভিড়েও যা চোখে পড়ার মত। সুগঠিত শরীর। বুঝতে কষ্ট হয় না এ হাতে এক টুকরো কাঠ তলোয়ারের চেয়েও ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। ওকে দেখে মনে হচ্ছিল, যেন কোন পরাজিত ফৌলের মালার কিংবা দেবে যাওয়া নৌকার সারি অথবা এখন বাঙ্গাল নেকবদনা