Category:পশ্চিমবঙ্গের উপন্যাস
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
আজই শেষদিন! শেষ হচ্ছে বই ও পণ্যে ৭০% পর্যন্ত ছাড়! বছরের সেরা ডিল, রকমারি ক্লিয়ারেন্স সেল, ২০২৫
হঠাৎ চলন্ত জীপ থেকে ছিটকে পড়ে যেতে-যেতে বাঁচবার আশায় আকুল আগ্রহে হাত বাড়ালেন পূর্ণলক্ষ্মী। একটি অট প্রার্থনায় নড়ে উঠলাে ঠোট, কী বললেন, কাকে বললেন, কিছুই বােঝা গেলাে না ; কেবল গাড়িটা বিদ্যুৎগতিতে বোঁ-বোঁ করে ধুলাের ঝড় তুলে চক্ষের পলকে কোথায় উধাও হয়ে গেলাে। তিনি চঁাচাতে চেষ্টা করলেন, আওয়াজ বেরুলাে না গলা দিয়ে, অশেষ যন্ত্রণায় দুমড়ে মুচড়ে করে করে ফেলতে চাইলেন শরীরটা। এক ফোঁটা নড়লাে ন, চোখ খুলে আর একবার, আরাে একবার শেষবারের মতাে দেখতে চাইলেন পৃথিবীটাকে চোখের পাতা নিশ্চল হয়ে রইলাে। তারি মধ্যে ইতিহাস হয়ে যাওয়া জীবনটাকে আবার দপ করে চোখের তলায় ফুটে উঠতে দেখলেন। স্বপ্ন। শুধু স্বপ্ন। সারাজীবনের স্বপ্ন। স্বামী সন্তানের স্বপ্ন, ভরা সংসারের স্বপ্ন। কেমন করে শুন্য কলসী ধীরে-ধীরে একদিন পূর্ণ হয়ে উঠেছিলাে, আর কেমন করে সেই কলসীর জল একেবারে শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে গেলাে তার স্বপ্ন। ছায়াছবির মতাে একের পর একটি দৃশ্য পরিষ্কার স্পষ্ট চেহারা নিয়ে ফুটে উঠতে লাগলাে তাঁর চিরকালের জন্য বুজে-আসা চোখের তলায়। স্মরণশক্তির সুতীব্র আঘাতে বুকের পাঁজরগুলাে খ’সে যেতে লাগলাে। দুরন্ত রােদুরের তাপে পুড়তে-পুড়তে আটষট্টি বছর আগে যেদিন তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সেদিনটাকে প্রত্যক্ষ করলেন মৃত্যুর অতল অন্ধকারে তলিয়ে যেতে-যেতে। দেখলেন সেই থমথমে সন্ধ্যা, সঁতসেঁতে আঁতুড় ঘর, আর কতকগুলি হতাশ মুখের ফ্যাকাশে রঙ। একটা শেয়াল দৌড়ে গেলাে, ভাঙা আঁতুড় ঘরের বেড়ার ফাঁকে হাওয়া ব’য়ে গেলাে শিরশির করে, মা নবজাত সন্তানের মুখ দেখে কেঁদে উঠলেন।
Report incorrect information