Category:পশ্চিমবঙ্গের বই: উপন্যাস
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
আজই শেষদিন! শেষ হচ্ছে বই ও পণ্যে ৭০% পর্যন্ত ছাড়! বছরের সেরা ডিল, রকমারি ক্লিয়ারেন্স সেল, ২০২৫
অনেক দিন আগেকার কথা। কিন্তু সব মনে পড়ছে। সব কিছু স্পষ্ট মনে আছে আমার। মনে থাকবে না? ওই দিনটার কথা কি ভোলা যায়? অসম্ভব। কোনোদিন ভুলতে পারব না। কোনোদিন না, জীবনেও না।
এই অ্যালবামটায় আর কটা ছবি আছে? সব ছবি কি ক্যামেরাম্যানের ক্যামেরায় তোলা সম্ভব? কোনো ক্যামেরাম্যান তুলতে পারে না, পারবে না। যত রকমের যত দামি ক্যামেরাই আবিষ্কার হোক, মানুষের মনের ক্যামেরার কাছে হেরে যাবেই। এই তো এই এত মোটা অ্যালবামে সেই একটি দিনের কত ছবি রয়েছে। কয়েক ডজন ফটোগ্রাফার এইসব ছবি তুলেছিলেন। প্রত্যেকটা ছবি সুন্দর উঠেছে। এত বছর পরেও একটা ছবি নষ্ট হয়নি। মনে হচ্ছে কয়েক দিন আগেই তোলা হয়েছে। লরিটায় এত ভিড়। কতজন যে সেদিন ওই লরিতে উঠেছিল তার হিসাব নেই। সবার মুখগুলোই ছোট ছোট উঠেছে। কিন্তু তবুও আমি প্রত্যেককে চিনতে পারছি। আনন্দ, বিমল, হেমেন, তুলসী, কানাই... ।
ওই তো ছোট ভাই! আনন্দে গোরার কাঁধে উঠেছে। গলায় মালা পরেছে। সৌমেনেরই একটা মালা নিয়ে পরেছিল আর কি! সব্বাইকে দেখতে পারছি, চিনতে পারছি। ছবিগুলো সত্যি খুব ভালো উঠেছিল কিন্তু—
কিন্তু অত বড় বড় নামকরা প্রেস ফটোগ্রাফাররাও কি আমার মনের ছবি তুলতে পেরেছেন? পেরেছেন কি অশোক, মানু, টিঙ্কুর আনন্দের ছবি তুলতে? দাদার গর্ব? দিদির তৃপ্তি? মা-র বুকভরা স্নেহের ছবি? প্রসেশানটা আমাদের বাড়ির সামনে থামিয়ে সৌমেন মা-দাদাকে প্রণাম করতে এসে এক মুহূর্তের জন্য আমার দিকে তাকিয়েছিল। শুধু এক মুহূর্তের জন্য। কোনো কথা বলেনি। বলতে পারেনি। অত ভিড়ের মধ্যে আমাকে কি বলবে? কোনো, কথা না বললেও ওই ক্ষণিক মুহূর্তের জন্য চোখ তুলে দেখার মধ্যেই সব কথা বলা হয়েছিল। সব কথাই কি মুখ দিয়ে বলতে হয়? নাকি কান দিয়ে শুনতে হয়? ওই এক টুকরো মুহূর্তের ওই অবিস্মরণীয় দৃষ্টিপাতের কি ছবি তোলা যায়? শুধু মনের ক্যামেরাতেই ও-ছবি তোলা যায়।
এই পুরনো অ্যালবামটা আমি দেখি না। দেখতে চাই না।
Report incorrect information