Category:পশ্চিমবঙ্গের বই: উপন্যাস
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
আজই শেষদিন! শেষ হচ্ছে বই ও পণ্যে ৭০% পর্যন্ত ছাড়! বছরের সেরা ডিল, রকমারি ক্লিয়ারেন্স সেল, ২০২৫
এই পাইন গাছের আলোয়-ছায়ায় ঘুরে ঘুরেই কেটে গেল সারাটা দিন৷ কেটে গেল পাখির ডাক শুনে আর দূরের শিবালিক পাহাড় দেখে।
বেশ লাগল। অনেক দিন পর মনটা সত্যি খুশিতে ভরে গেল। বেশ হালকা মনে হলো নিজেকে।
এই পৃথিবী বড় বিচিত্র। তিন ভাগ জল থাকা সত্ত্বেও বড় নিষ্ঠুর। বড় নির্মম। সব কিছু থেকেও কোথায় যেন একটু ফাঁক থেকে গেছে। সেই অদৃশ্য অজ্ঞাত ছিদ্র দিয়েই মানুষকে হারাতে হয় কত কিছু। মাঝে মাঝে ভাল লাগলেও সুর কেটে যায় বড় বেশি। রঙিন বসন্তের পাশে-পাশেই শীতের জড়তা।
আজ কিন্তু বেশ লাগছে। গণ্ডীবদ্ধ সংসারের বাইরে উদার সবুজ প্রকৃতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বেশ লাগছে। এই মৌন প্রকৃতি যেন সিদ্ধপুরুষ। সর্বত্যাগী মহাসন্ন্যাসী। সুখ-দুঃখ ভাল-মন্দের জোয়ার-ভাঁটা তাঁকে স্পর্শ করতে পারে না। একটা মিষ্টি পরিতৃপ্তিতে আমার মনটা ভরে গেল।
বোটানিক্সের পাশ দিয়ে ঘুরতে বেশ লাগছিল। একটা কাঠবেড়ালী সামনে এসে দাঁড়াল। হঠাৎ। একেবারে আমার মুখোমুখি। হয়ত আগন্তুক দেখে খবর নিতে এসেছে। একবার যেন হাসল। লেজ নাড়তে নাড়তে হাসল। বিদ্রূপের হাসি নাকি ? ঠিক বুঝতে পারলাম না। আমিও হাসলাম। ব্যস! কাঠবেড়ালীটা সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে পালাল বনের মধ্যে।
আমি বিস্মিত হয়ে দাঁড়িয়েই রইলাম। অপলক দৃষ্টিতে ওর পথের দিকে চেয়ে রইলাম। ছোট্ট একটা জীব। কতটুকুই বা ওর প্রাণ! তবু কত প্রাণচঞ্চল। কত হাসিখুশি। বিদ্যা-বুদ্ধি বিবেচনা থাকা সত্ত্বেও আমরা কি অত প্রাণচঞ্চল হতে পারি ? অত সহজ সরল ?
আশপাশের গাছপালা আর ঐ দূরের শিবালিক আরো ভাল লাগল। ভাল লাগল নিজেকেও। পর পর কয়েকবার জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে সারা বুকটা ভরিয়ে নিলাম।
কাঠবেড়ালীটার পথ চেয়ে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম জানি না। হয়ত কয়েক মিনিট, হয়ত আরো বেশি। পেছন থেকে গাড়ির হর্ন শুনে সরে দাঁড়ালাম। গাড়িটা চলে গেল। আমিও হাঁটতে শুরু করলাম।
বোটানিক্স পেছনে ফেলে এলাম বিরাট সবুজ মাঠের মাঝে। দূরে এফ আর- আই-এর মেন বিল্ডিং। পাষাণে গাঁথা অত বড় বিল্ডিংটাকেও খারাপ লাগল না।
Report incorrect information