১৯৪৭ সালের এপ্রিল মাসে পিতৃদেব হরিপদ মুখোপাধ্যায় যখন হাওড়ায় আচমকা দেহ রক্ষা করলেন তখন আমার বয়স তেরো বছর। মৃত্যু যখন অতর্কিতে আমাদের আক্রমণ করল তখন রাত দুপুর, তার ওপর সমস্ত হাওড়ায় শহরে তখন কারফিউ, পুলিশের বিনা অনুমতিতে পথে বেরুবার স্বাধীনতা নেই নাগরিকের। আমরা ভাড়া বাড়িতে থাকি, আমার তলায় ছ'টি নাবালক ভাইবোন। ওপরে এক অবিবাহিতা দিদি, পৈত্রিক সঞ্চয় বলতে প্রায় কিছুই নেই। অজানা বিপদের আশঙ্কায় এক রাত্রেই আমি নাবালক থেকে সাবালক হয়ে গেলাম।
অপরাধ স্বীকার করে নেওয়াই ভালো। সে রাত্রে শোক কাকে বলে তা বুঝতে পারিনি, তখন শুধু ভাবছি আমাদের আটভাইবোন ও মায়ের এই পরিবারের কী হবে? পিতৃশোক এসেছিল, কিন্তু সে অনেকদিন পরে-সত্যি কথা বলতে কী সাতান্ন বছর লুকিয়ে থেকে পিতৃশোক ।