9 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
TK. 600
আজই শেষদিন! শেষ হচ্ছে বই ও পণ্যে ৭০% পর্যন্ত ছাড়! বছরের সেরা ডিল, রকমারি ক্লিয়ারেন্স সেল, ২০২৫
বইটি বিদেশি সাপ্লাইয়ারের নিকট থেকে সংগ্রহ করতে ৩০-৪০ দিন সময় লাগবে।
Related Products
Product Specification & Summary
আমার হাতে দুটো মোহর। আর একটা সোনার সিকি। মোহর দুটোর একটা বড় একটা ছোট। আকবরি মোহর। ওগুলোর ওপর টানা-টানা লেখাগুলো উর্দু কি ফারসি জানি না। সকলের মুখে-মুখে এও 'আকবরি লেখা।' সোনার সিকিতেও একই হরফের স্বাক্ষর। বসুচৌধুরীদের ভাগ্যোদয়ের স্বাক্ষরও। এটা বেরিয়েছে কয়েকশ বছরের পুরনো লক্ষ্মীর ঝাঁপি থেকে।
সোনার সিকি ভাঙালে সোনার মোহর মেলে? তিল ভেঙে তাল হয়? তা কখনো হয়, না হতে পারে! ওই মোহর মিলেছে সিকি না ভাঙিয়ে। দুটো মোহর নয়। দুশ বা দু হাজারও নয়। তার থেকে ঢের ঢের বেশি। শুনতে কে গেছে? অত বস্তা-বোঝাই মোহর গুনে শেষ করে কে? ওই মোহরের একটাই হিসেব জানে সকলে। দীর্ঘ-অঙ্গ পরিপুষ্ট এক সবল মানুষের যত ওজন, ততো বস্তা মোহর।....দাঁড়ি-পাল্লার একদিকে সেই প্রবাদ-পুরুষ বসে। অন্য দিকে ওই মোহরের বস্তা। বস্তার ওপর বস্তা। সামনে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন রাজাধিরাজ কাশীনরেশ। পাশে তাঁর আনন্দবিহ্বল পারিষদেরা। মোহর আসছে রাজকোষ থেকে। কাশীরাজের হুকুম ওই পুরুষের ওজন আর মোহরের ওজন সমতুল্য করে দিতে হবে।
..ওই পুরুষ-বংশের জাতক জাতিকারা আজও অবশিষ্ট এই দুটো মোহর দেখে। দেখার সেতু-পথ ধরে অনায়াসে তারা কালের সমুদ্র পার হয়ে যায়। এই দুটো মোহর তাদের সেই মোহর ওজন করার মহোৎসবে পৌঁছে দেয়। তারা লক্ষ্মীর ঝাঁপির এই সোনার সিকিটি দেখে । এই সিকির দাম তাদের ভাবের চোখে ওই বস্তা বস্তা মোহরের থেকে কম নয় একটুও। লক্ষ্মী তার ঝাঁপিতে সোনার সিকি ফেরত নিয়েছে। ওটা না-ভাঙানো না-খোয়ানোর মূল্য হিসেবে বস্তা বস্তা মোহর লক্ষ্মী ধরে দিয়েছে। তার ভক্তের যত ওজন, তত মোহর।
মোহর দুটো এখন আমার হাতে। লক্ষ্মীর ঝাঁপির সোনার সিকিও। এই মুহূর্তের রোমাঞ্চ আমি লিখে বোঝাতে পারব না। সামনে দুহাতের মধ্যে মা বসুচৌধুরানী বসে। সুদূরকালের কোনো একজন নয়। এই যুগের এই সদ্য বর্তমানেরই একজন। হিসেবের বয়েস বড় জোর ষাট। এই হিসেব ধরলে বয়েসটা আমারও পিছনে। আচার-আচরণে কালের শাশ্বত মহিমা আজও এই মুখে ছড়িয়ে আছে। আবার চলনে বলনে আধুনিক। প্রশস্ত ঠাকুরঘরে রাধা- মদনমোহনের বিগ্রহের সামনে শ্বেত পাথরের মেঝেতে বসা তাঁর নিস্পন্দ সমর্পিত মুখের মহিমা দেখেছি। বিশিষ্টজনের গীতা-উপনিষদ ব্যাখ্যার আসরে বসে ভাব-তন্ময়তায় তাঁকে বেতস পাতার মতো দুলতে দেখেছি।