অফিস থেকে ফিরে বিছানায় শুয়ে পড়ে রিনা। শরীর যেন আর ওর বইছে না। পেঁয়াজ-আদা আর কাঁচালংকা কুচি দিয়ে মুড়ি মাখিয়ে এনেছে ছোট বোন টিনা। গরম চায়ের পেয়ালা টেবিলে ঠক্ করে রেখে বলে- এই আপা ওঠ, চা ঠাণ্ডা হয়ে যাবে।
উঠে মুড়ি মুখে দেবে, চায়ের পেয়ালায় চুমুক দেবে ভাবতেই ওর গা গুলিয়ে ওঠে। নিজের ওপর কেমন যেন রাগ হতে থাকে ভীষণ। বুকের ভেতরটা তীব্র দহনে পুড়ে যেতে থাকে।
বাড়ির সামনে রিকশা থেকে নেমে চোখ পড়ে তিনতলার ব্যালকনিতে। গ্রিল ধরে মলিন মুখে দাঁড়িয়ে আছে টপ্পা। দৃশ্যটা দেখার পর থেকেই কান্না পেতে থাকে ওর। বাড়ি ভর্তি লোক। চার তলা বাড়ির তিনটি তলা ভাড়া দেয়া। তিন তলায় আম্মা- ভাইয়া-ভাবি তার ছেলে-মেয়েরা, কলরব রাত বারোটার আগে থামে না। কিন্তু নিজের মেয়েটা একা একা আপনমনে ঘুরে বেড়ায়। কারো সাথে যেন ঠিকঠাক মতো মেলামেশা করতে পারছে না। রিনা খেয়াল করে দেখেছে আদর করে টপ্পাকে কেউ কাছেও ডাকে না আজকাল। অনাদৃত, অবহেলিত, অবাঞ্ছিত হয়ে যেন সে এ বাড়িতে রয়েছে। শৈশবের সব আনন্দ ওর ফুরিয়ে গেছে।