“ডায়েট” শব্দটা শুনলেই অনেকের মন খারাপ হয়ে যায়। মনে হয় বুঝি খাবারের স্বাদ শেষ।
একসময় আমারও ঠিক এমনটাই মনে হতো। কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝেছি, ডায়েট কোনো শাস্তি না। অচেনা খাবার খেতে হবে এমনও না। বরং একটু চিন্তা, একটু ভারসাম্য আর কয়েকটা ছোট পরিবর্তনেই আমাদের প্রতিদিনের মাছ, মাংস, ডাল, ডিম আর সবজি একদম পুষ্টিকর আর সুস্বাদু ডায়েট হয়ে উঠতে পারে।
এই উপলব্ধি থেকেই শুরু আমার এক্সপেরিমেন্ট।
কীভাবে ঘরের সাধারণ উপকরণে স্বাস্থ্যকর, কম ক্যালরির, কিন্তু দারুণ স্বাদের খাবার বানানো যায় - এই বইয়ের প্রতিটি রেসিপি সেই যাত্রার ফল।
আমার বিশ্বাস খুব সহজ। ডায়েট মানে আলাদা খাবার নয় বরং পরিচিত খাবারের সঠিক ভারসাম্য। কার্ব, প্রোটিন আর ফ্যাটের সুন্দর সমন্বয়ই পুরো খেলাটা বদলে দেয়।
একটু কম তেল, একটু বাড়তি প্রোটিন, আর স্মার্ট রান্নার কৌশল
আপনার প্লেটকে করে তুলতে পারে আরও স্বাস্থ্যকর, তৃপ্তিকর আর সম্পূর্ণ।
এই বইয়ের লক্ষ্য সহজ এবং স্পষ্ট।
১. রোজকার রান্নাকে এমনভাবে সাজানো যাতে সেটাই হয়ে যায় ডায়েট-ফ্রেন্ডলি।
স্বাদ থাকবে, পুষ্টিও থাকবে।
২. পুরো পরিবারের জন্য এমন স্বাস্থ্যকর অভ্যাস তৈরি করা
যাতে ডায়েট আলাদা কিছু মনে না হয়।
৩. একঘেয়েমি দূর করতে বৈচিত্র আনা, যাতে বাইরের জাঙ্ক বা প্রসেসড খাবারের দিকে মন না যায়।
৪. কম সময়ে, কম উপকরণে, নারী বা পুরুষ যে কেউ সহজেই বানাতে পারে এমন রেসিপি রাখা, যাতে ব্যস্ত জীবনেও ঝামেলা ছাড়াই পুষ্টিকর খাবার তৈরি করা যায়।
আরেকটা সত্যি কথা, ছোট পরিবর্তনই বড় পার্থক্য আনে।
যেমন অতিরিক্ত সয়াবিন তেলের বদলে পরিমিত ঘি, বাটার, অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল ব্যবহার করলে লিপিড প্রোফাইল ভালো থাকে আর শরীরও থাকে হালকা ও এনার্জেটিক।
আমি চাই এই বইটা যেন আপনার রান্নাঘরের এক বন্ধুর মতো হয়। যে আপনাকে প্রতিদিন মনে করিয়ে দেবে- খাওয়া আনন্দের ব্যাপার, অপরাধবোধের নয়।
এখানকার প্রতিটি রেসিপি তৈরি করেছি অভিজ্ঞতা, ভালোবাসা আর পুষ্টির হিসাব মাথায় রেখে। যাতে খাওয়া আপনাকে শক্তি দেয়, আনন্দ দেয়, আর আপনার স্বাস্থ্যকে নিয়ে যায় সঠিক পথে।
ডায়েট যেন আর ভয়ের নাম না হয়। বরং হয়ে উঠুক এমন এক সহজ, উপভোগ্য, টেকসই অভ্যাস যা আপনাকে প্রতিদিন আরও ভালো অনুভব করাবে।
মলুয়া খান