আজই শেষদিন! শেষ হচ্ছে বই ও পণ্যে ৭০% পর্যন্ত ছাড়! বছরের সেরা ডিল, রকমারি ক্লিয়ারেন্স সেল, ২০২৫
মুখবন্ধ
কবিতা মহৎ অনুভূতির প্রতিধ্বনি, আর কবি হলেন সেই শিল্পী, যিনি স্থূল আবেগকে সূক্ষ্মতম সংবেদনে রূপায়িত করেন। এখানে অলংকারের বাহুল্য নয়; প্রয়োজন উপযুক্ত শব্দের নির্ভুল সন্নিবেশ।
ক্ষুদ্র বাক্যের কাঠামোতে কবিতা বিশাল আবেগ ও বিশ্বজনীন সত্যকে ধারণ করে। এই সংহতি এবং সংযমই কবিতার অন্যতম প্রধান সৌন্দর্যÑযা কবিকে কেবল কথক নয়, বরং কালের সাক্ষী এবং হৃদয়ের ভাষ্যকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা দেয়। কবিতা তাই কেবল ভাষার ব্যবহার নয়, এটি মানব-হৃদয়ের শাশ্বত আর্তি এবং জীবনের মহত্তম রহস্যের নিগূঢ় উপলব্ধি। সেই উপলব্ধিকেই উপযুক্ত শব্দের সুনিপুণ বুননে, মনের সূক্ষ্ম স্পর্শে অনন্য করে তোলেন একজন কবি। কবিতা ও কবি নিয়েই আজকের আলোচনার অবতারণা।
শিমুল পারভীনের ‘যে নামেই ডাকো তুমি’ গ্রন্থে কবিতাগুলো কখনো নিরাভরণ, কখনো অলংকৃত; কিন্তু প্রতিবারই হৃদয়ের গভীর সত্যকে সহজভাবে প্রকাশ করেছে। যেমনÑ ‘তবু তুমি যে নামেই ডাকো আমি দেব সাড়া’ নাম বদলালেও অনুভব বদলায় নাÑএখানেই সম্পর্কের চিরকালীন স্বীকৃতি। কবি জানিয়ে দেন, ভালোবাসার পরিচয় উচ্চারণে নয়, অনুভবে।
কবিতায় মনের মূল্যও উঠে এসেছে দর্শনের ভাষায়Ñ
‘মনেই তো সব, মনের মতো দামি কিছুই নেই।’
জীবনের সব সুখ-দুঃখের কেন্দ্রবিন্দু হলো মন; তাই মনই আসল ধন, মনেই জীবনের সম্পদ।
আরেকটি দারুণ রূপকÑ
‘মানুষের মন বাড়ির মতো দরজা বন্ধ দেখে সবাই, অভিমানের খিল দেখে না কেউ।’
বাইরের আচরণ সবাই দেখে, কিন্তু অন্তরের ব্যথা অদৃশ্য থাকে। মনকে বুঝতে হলে দরজায় নয়, অন্তরের ‘খিল’-এ নজর দিতে হয়Ñ এই বোধটিই কবিতা আমাদের উপহার দেয়।
এই বইয়ের প্রতিটি কবিতা এমন মৃদু অথচ কঠিন উচ্চারণে লেখা, যা পাঠকের গভীরে পৌঁছে মনোজগতের সঙ্গে যুক্ত করে। স্মৃতি, সম্পর্ক, অভিমান, হৃদয়ের অসুখ, ভুল মানুষের জন্য মায়াÑসবই এখানে আছে, কিন্তু কাব্যিক সৌন্দর্যের সাথে।
এই বইয়ের আন্তরিকতা এবং সহজ প্রকাশভঙ্গি নিঃসন্দেহে এর মূল শক্তি। সরাসরি
আমি বিশ্বাস করি, ‘যে নামেই ডাকো তুমি’ শুধু একটি কবিতাগ্রন্থ নয়Ñএটি অনুভবের স্বরলিপি। এর সহজ স্বীকারোক্তি এবং স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ এটিকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করেছে। এটি তাঁর প্রাপ্য প্রশংসা।
আমি সবাইকে আহ্বান জানাই, এই স্বরলিপিটি হৃদয়ের কানে শোনার জন্য।
জয়তু শিমুল পারভীন।
শহীদুল্লাহ ফরায়জী
লেখক, গীতকবি
Report incorrect information