শহরের অন্ধকার গলিতে তার নাম ‘ইঁদুর’। ক্ষুরধার ব্লেড আর চতুর মস্তিষ্কই তার সম্বল। চোখের পলকে মানুষের পকেট কেটে ভিড়ে মিশে যাওয়া তার পেশা। কিন্তু ভাগ্যের এক অদ্ভুত খেলায়, এক অসহায় বাবার পকেট কাটতে গিয়ে অনিকের নিজের বিবেকের পকেটটাই কাটা পড়ে যায়।
শুরু হয় এক অসামান্য রূপান্তরের গল্প। ফুটপাত থেকে সোজা কর্পোরেট জগতের কাঁচঘেরা প্রাসাদে। অনিক আবিষ্কার করে, একজন দক্ষ পকেটমার আর একজন সফল সেলসম্যানের মনস্তত্ত্ব আসলে খুব কাছাকাছি—পার্থক্য শুধু সততায়। রাস্তার অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে সে কর্পোরেট জগতে নিজের জায়গা করে নিতে শুরু করে।
কিন্তু অতীত কি এত সহজে পিছু ছাড়ে? প্রেমিকা নীলার অগাধ বিশ্বাস, অফিসের নোংরা রাজনীতি, নীল খামের ব্ল্যাকমেইলিং আর এক খুনের মিথ্যা দায়—সব মিলিয়ে অনিকের সাজানো বাগান তছনছ হওয়ার পথে। সে কি পারবে তার ‘ইঁদুর’ পরিচয় মুছে ফেলে মানুষ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে?
কেন পড়বেন এই বই? এটি কেবল একটি উপন্যাস নয়, এটি জীবনের পাঠশালা। শ্বাসরুদ্ধকর গল্পের ছলে লেখক শিখিয়েছেন:
নেতৃত্ব (Leadership): প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কীভাবে দল পরিচালনা করতে হয়।
কর্পোরেট রাজনীতি: কর্মক্ষেত্রে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে টিকে থাকার কৌশল।
আত্মউন্নয়ন (Self-Development): শূন্য থেকে শিখরে পৌঁছানোর মানসিকতা।
যারা জীবনে বারবার হোঁচট খেয়েও উঠে দাঁড়াতে চান, যারা পেশাগত জীবনে সাফল্যের জাদুকরী চাবিকাঠি খুঁজছেন—তাদের জন্য ‘পকেট কাটা ইঁদুর’ এক অনিঃশেষ অনুপ্রেরণার উৎস।
প্রযুক্তি আর প্রজ্ঞার নিবিড় মেলবন্ধনে গড়া নাম ওয়াহিদুর রহমান, যিনি ডিজিটাল ভুবনে ‘ফ্রিল্যান্সার ওয়াহিদ’ নামে সমধিক পরিচিত। নব্বইয়ের দশকের শেষলগ্নে নোয়াখালীর স্নিগ্ধ আবহে জন্ম নেওয়া এই স্বপ্নদ্রষ্টা বর্তমানে ঢাকার বাসিন্দা হলেও, তাঁর মননে মিশে আছে শেকড়ের ঘ্রাণ। ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে তিনি যেমন অতীতকে দেখার চোখ রাখেন, তেমনি ব্যবসায় প্রশাসনের গবেষক হিসেবে বুনতে জানেন আগামীর স্বপ্ন। যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্র—আন্তর্জাতিক কর্মপরিধিতে বিচরণ থাকলেও তাঁর শেকড় প্রোথিত বাংলা সাহিত্যে। এলসেভিয়ারের মতো বিশ্বখ্যাত জার্নালের রিভিউয়ার কিংবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গবেষণা—সবখানেই তিনি রেখেছেন মেধার স্বাক্ষর।
তাঁর লেখনী তরুণদের দেখায় স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন ও আত্মজাগরণের মন্ত্র। ‘জীবনের জ্যামিতি’ কিংবা ‘প্রজ্ঞার পাঠশালা’-য় তিনি যেমন জীবনের সমীকরণ মিলিয়েছেন, তেমনি ‘আমি হবো ফ্রিল্যান্সার’ ও ‘নিজেকে জাগাও’ বই দিয়ে দেখিয়েছেন আলোর পথ। প্রযুক্তিগত দক্ষতা আর সৃজনশীলতার মিশেলে তিনি তাঁর পাঠকের জন্য তৈরি করেন এমন এক জগত, যা কেবল তথ্য দেয় না—বরং ভাবায় ও স্বপ্ন দেখায়।