বিষয়ভিত্তিক বয়ানের অনবদ্য একটি জখিরা। এতে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বছরে যে বিষয়গুলোর আমরা মুখোমুখি হই এমন প্রায় প্রতিটি বিষয়ই এতে স্থান পেয়েছে। সবমিলিয়ে দ্বিতীয় খণ্ডে রয়েছে ৪৮টি আলোচনা ।
মিম্বরের পয়গামের কিছু বৈশিষ্ট্য :
*প্রতিটি বয়ানে সৃজনশীলতা ও নতুনত্বের ছোয়া
*ইলমিভাবে জটিল-কঠিন বিষয়গুলো সহজে উপস্থাপন
* প্রতিটি বিষয়ে যথেষ্ট পরিমাণ নুসুস (কুরআনের আয়াত ও হাদিস) সংযোজন
* হাদিসের মান নির্ধারণ
*শুদ্ধা-শুদ্ধির প্রতি পূর্ণ লক্ষ রেখে প্রচলিত বানোয়াট বিষয়াদি বর্জন
*প্রতিটি আলোচনার শেষে ‘একনজরে আজকের বয়ান’ শিরোনামে অল্প কথায় পূর্ণ আলোচনার সার-সংক্ষেপ উল্লেখ করা হয়েছে যা পূর্ণ বয়ানকে সহজেই স্মরণে এনে দেয়।
*আদাবুল খাতিব শিরোনামে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ ও নির্দেশনা যুক্ত করা হয়েছে যা আলোচক ও খতিবদের জন্য খবই উপকারী হবে।
*দুই ঈদ, জুমার দ্বীতিয় খুতবাসহ নির্বাচিত অনেকগুলো আরবি খুতবা
*‘মিম্বারের পয়াগাম’-এর অন্যতম একটি সুন্দর দিক হলো, এর প্রথম খণ্ডে রয়েছে নবি জীবনের বিশদ বিবরণ। রবিউল আওয়াল মাসকে কেন্দ্র করে নবি জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। নবিজির দুনিয়ায় আগমনপূর্ব জাহেলি যুগ থেকে নিয়ে নবিজির ওয়াফাত পর্যন্ত দশ পর্বে নবিজির সীরাত আলোচিত হয়েছে।
*ইসলামের মৌলপাঁচ রুকনগুলো বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয়েছে। যেমন, সাত পর্বে ইমান-আকিদা, ছয় পর্বে সালাত, দশ পর্বে হজ ও নয় পর্বে রোজা ও জাকাত বিষয়ে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
‘বইটি খতিব সাহেবদের জন্য জুমার আলোচনায়, ওয়াজিনে কেরামের মাহফিলের বয়ানে,শিক্ষার্থীদের সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে বক্তৃতার ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক হবে। তাছাড়া সকল মুসলিম নারী-পুরুষ এখান থেকে বারো মাসের করণীয় আমল ও দীনি অন্যান্য বিষয় সহজেই জেনে নিতে পারবেন’।
মুফতি হাসানুজ্জামান। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের জাটিয়া ইউনিয়নের টংটংগীয়া গ্রামে নব্বই দশকের শুরুর দিকে সম্ভ্রান্ত কাজী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক লেখাপড়ার হাতেখড়ি ঘাগরাপাড়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। মাত্র দেড় বছরে ঈশ্বরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বাইতুল কুরআন মাদরাসায় হিফজ সম্পন্ন করেন। হিফয শোনানোর পর সেখানেই কিতাব বিভাগে প্রতিটি ক্লাসে মেধার সাক্ষর রেখে হিদায়াতুন্নাহব পর্যন্ত পড়েন। এরপর উচ্চতর পড়াশোনার জন্য শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক রহ. প্রতিষ্ঠিত জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া সাত মসজিদ মোহাম্মদপুর মাদরাসায় ভর্তি হন। সেখানেও প্রতিটি পরীক্ষায় সিরিয়ালে থেকে বেশ সুনামের সাথে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপ সফলভাবে উত্তীর্ণ হন। ময়মনসিংহের আঞ্চলিক শিক্ষা বোর্ড ইত্তেফাকুল মাদারিসিল কাওমিয়্যাহ ও কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাক-এর প্রতিটি পরীক্ষায় মেধাস্থান লাভ করেন। দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করার পর জামিয়া রাহমানিয়াতেই ইসলামিক ল’ তথা ইসলামি আইনশাস্ত্রে গভীর জ্ঞান অর্জনের জন্য দুই বছর ইফতা বিভাগে অধ্যয়ন করেন। উস্তাদদের তত্ত্বাবধানে থেকে গভীর অধ্যয়ন ও বিস্তৃত গবেষণার মাধ্যমে নিজেকে যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য আলেম হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়াস পান। পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে উস্তাদদের অধীনে থেকে উলুমুল হাদিস বিষয়েও ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা সমাপ্তির পর স্বীয় উস্তাদের তত্ত্বাবধানে রাজধানীর অদূরে মুন্সীগঞ্জের দেওভোগ বড় মাদরাসায় ইফতা বিভাগের মুশরিফ ও মুহাদ্দিস হিসেবে চার বছর দায়িত্ব পালন করেন। এক পর্যায়ে উস্তাদদের পরামর্শে নিজ এলাকায় দীনের বহুমুখী খেদমত করা ও ইলমে দীন বিস্তারের লক্ষ্যে নিজ জেলার স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান জামিয়া রহমানিয়া দারুল উলূম, গৌরীপুরে যোগদান করেন। বর্তমানে এখানেই হাদিসের দরস ও ইফতা বিভাগের মুশরিফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও ময়মনসিংহ মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ‘বাঘমারা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ’-এ খতিব হিসেবে খেদমত আঞ্জাম দিচ্ছেন ।