আল-কুরআনুল কারীম আল্লাহ তা‘আলার বাণী সম্বলিত বিশুদ্ধ গ্রন্থ, যা বিশ্বের সর্বাধিক পঠিত গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত। গ্রন্থটি মানবজাতির হিদায়াতের অন্যতম উৎস এবং মুসলমানদের জন্য জীবন বিধান ও শাসনতন্ত্র তথা সংবিধান হিসেবে পরিগণিত। এটি ইসলামী শরীয়তের প্রথম ও অন্যতম প্রধান উৎস। গ্রন্থটিতে মানুষের জীবন পরিচালনার জন্য মহান আল্লাহ্ তা‘আলার আদেশ-নিষেধ সম্পর্কিত সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা বিদ্যমান। এ কারণেই যুগে যুগে আলিমগণ কুরআন মাজীদের সাধনায় নিজেদেরকে আত্মনিয়োগ করেছেন। ফলে কুরআন মাজীদকে কেন্দ্র করে বহু জ্ঞান-বিজ্ঞানের সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রণীত হয়েছে অগণিত গ্রন্থ। আর এসবই আল-কুরআনকে সঠিকভাবে বুঝার উদ্দেশ্যে রচিত।
ইসলামী শরীয়তে কুরআন মাজীদের গুরুত্ব অপরিসীম। গ্রন্থটি মুসলিম জাতির জীবন বিধানের পাশাপাশি ইবাদত পালনেরও অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। এমনকি শুধু কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করাও ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। এছাড়া ইসলামের বহু ইবাদত আল-কুরআনুল কারীমের সাথে সংশ্লিষ্ট। এ কারণেই গ্রন্থটি অনুধাবন করা সকল মুসলিমের জন্য অপরিহার্য।
বিশুদ্ধ উচ্চারণ ও সঠিকভাবে কুরআন মাজীদ শিক্ষা করা প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য। কেননা কুরআন ও হাদীসে বিশুদ্ধভাবে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করা সম্পর্কে বহু নির্দেশনা বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া সঠিকভাবে জীবনকে পরিচালনার জন্য অর্থসহ কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি কুরআন মাজীদের গবেষণায় নিযুক্ত হয়ে এর সঠিক মর্মবাণী উপলব্ধি করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা মুসলমানদের জন্য কর্তব্য।
হযরত মুহাম্মাদ (সা)-এর মাতৃভাষা আরবী হওয়ায় সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব আল-কুরআনও আরবী ভাষায় অবতীর্ণ হয়। আরবী ভাষা আমাদের মাতৃভাষা না হওয়ায় ভাষাটিকে আয়ত্ত করতে হলে আরবী ব্যাকরণ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই গ্রন্থকার ড. মাহবুবা রহমান আল-কুরআন বুঝার জন্য সহজে আরবী শিক্ষা গ্রন্থটি প্রণয়ন করেছেন।
গ্রন্থটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এতে আরবী ব্যাকরণের প্রতিটি নিয়ম আলোচনার পাশাপাশি আল-কুরআন থেকে উদাহরণ পেশ করা হয়েছে। ফলে পাঠকবৃন্দ খুব সহজেই আল-কুরআনে উল্লিখিত আরবী ব্যাকরণের নিয়মসমূহ আয়ত্ত করতে পারবেন। এছাড়া নামাযে পঠিত আল-কুরআনের ২৩টি ছোট সূরার পাশাপাশি কতিপয় তাসবীহ ও দোয়ার উচ্চারণ, শব্দার্থ ও অনুবাদ উল্লেখ করা হয়েছে।
গ্রন্থকার তাঁর দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে অতি যত্ন সহকারে গ্রন্থটি রচনা করেছেন। গ্রন্থটি কুরআন মাজীদকে ব্যাকরণসহ বুঝে পড়তে আগ্রহী সম্মানিত কুরআনপ্রেমী পাঠক, সুধীমহল ও জ্ঞানপিপাসু তথা সর্বস্তরের কুরআন পাঠকের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে বলে আমার প্রত্যাশা। আমার দৃঢ়বিশ্বাস, সম্মানিত পাঠকবৃন্দ মনোযোগ সহকারে গ্রন্থটি অধ্যয়ন করলে আল-কুরআন বুঝে পড়তে সক্ষম হবেন, ইনশাআল্লাহ! পরিশেষে গ্রন্থটির সর্বোচ্চ সফলতা কামনা করছি এবং মহান আল্লাহ্ যেন গ্রন্থকারকে ইহকালে ও পরকালে এর পরিপূর্ণ প্রতিদান প্রদান করেন সেই দোয়া করছি।