হযরত ওমর। রাযিয়াল্লাহু আনহু। ইস্পাত-দৃঢ় মনোবল। পাহাড়সম সাহস। কঠিন আত্মপ্রত্যয়ী এক লৌহমানব। যাঁর ভেতরে জ্বলে ওঠার সম্ভাবনা ছিল। ছিল ধ্বংসের অতল গহ্বরে হারিয়ে যাওয়ার প্রবল শঙ্কাও। নবীজির দুআ ছিল তাঁর জন্য। ফলে চূড়ান্ত ধৃষ্টতা দেখাতে গিয়েও জুটে গেল হিদায়াতের মুকুট। মুহূর্তেই নিজেকে বদলে নিয়ে হয়ে উঠলেন ইতিহাসের মহানায়ক। দিগ্বিজয়ী সিপাহসালার।
তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি কাবার আঙিনায় মহাসত্যের জয়গান গেয়ে কুফরের ললাটে আঘাত হেনেছিলেন। এতদিন তাঁর যে তরবারি মুসলমানের বিপক্ষে কোষমুক্ত ছিল, ছিল আলোর বিরুদ্ধে, অন্ধকারের পক্ষে সংগ্রামে। আজ তিনি নিজেই আলোর প্রদীপ হয়ে জ্বলে উঠলেন। ঈমান গ্রহণের পর থেকে আমরণ লড়েছেন কুফরের মূলোৎপাটন করতে। কখনো সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে, আবার কখনো পেছন থেকে শক্তি জুগিয়ে।
শত্রুর বিপক্ষে তিনি ছিলেন বজ্রকঠিন। ইসলামের আগে, ইসলামের পরেও। সকল অপরাধীর কাছে তিনি ছিলেন আতঙ্কের নাম। কাফির, মুনাফিক তাঁর ভয়ে তটস্থ থাকত। শয়তানও কি তাঁকে দেখলে স্থির থাকতে পারত? নাহ, ওমরকে দেখলেই শয়তান ছুটে পালাত।
তিনি অসত্যকে পদদলিত করেছেন।
করেছেন সত্যের পতাকাকে সমুন্নত।
মিথ্যার দেয়াল ভেঙে দিয়েছেন।
গড়েছেন মহাসত্যের দুর্গ।
ওহীর নির্দেশনার সঙ্গে মিলে যেত ওমরের আকাঙ্ক্ষা। কথাও বলতেন তিনি ওহীর সুরে সুরে।
চলাফেরায় সাধারণ। পোশাক-আশাকে নেই কোনো আড়ম্বরতা। খেজুরপাতার চাটাই ছিল তাঁর বিছানা। গায়ের জামায় ছিল জোড়াতালি। তখনো তিনি অর্ধজাহানের খলীফা!
জন্ম থেকে হিজরত।
হিজরত থেকে খিলাফত।
খিলাফত থেকে রাজ্যজয়।
খিলাফতের সীমানা প্রসার, শান্তির বন্দোবস্ত করতে করতে মৃত্যুর আগমন আর শাহাদাতের সুধা পান করে জান্নাতের পথে যাত্রা। এ বইয়ে আপনি জানতে পারবেন হযরত ওমরের জীবনের বহু আলেখা ঘটনা, যা পড়ে মনে হবে, ‘ওমরকে জানতাম, কিন্তু এতকিছু যে ওমরের মাঝে আছে, তা তো আগে জানতাম না!’