মানুষের জীবনে কিছু অনুভূতি থাকে, যেগুলোকে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। সময়, স্থান কিংবা পরিস্থিতি যতই পরিবর্তিত হোক, সেই অনুভূতি হৃদয়ের গভীরে শেকড় গেড়ে চিরকাল বেঁচে থাকে। ভালোবাসা তেমনই এক অদ্ভুত শক্তি যা কখনো বাঁধা মানে না দূরত্বের, মানে না সমাজের নিয়মকানুন কিংবা বাস্তবতার শৃঙ্খল।
এই উপন্যাসে ফুটে উঠেছে এক গ্রামীণ কিশোর আরিফ ও শহুরে মেয়ে মাহির প্রেমকাহিনী। দু-জনের প্রথম পরিচয় ঘটে শরতের নীল আকাশ, কাশফুলে ভরা গ্রাম আর নদীর ঘাটের নিস্তব্ধ পরিবেশে। সেখানে শুরু হয় এক নিষ্পাপ বন্ধুত্ব, যা ধীরে ধীরে রূপ নেয় ভালোবাসায়। কিন্তু জীবনের বাস্তবতা কখনো সহজ পথ দেয় না। পরিবারের সিদ্ধান্ত, দূরত্বের প্রাচীর, শহর-গ্রামের ভিন্নতা সবকিছু মিলিয়ে তাদের সম্পর্ক চলে যায় কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি।
আরিফ, এক কৃষক পরিবারের মেধাবী ছেলে, তার স্বপ্ন আর সাধনা দিয়েই ভালোবাসাকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়। অন্যদিকে মাহি, ব্যস্ত শহুরে জীবনের ঝলমল আলো-আঁধারির মাঝেও মনে মনে আঁকড়ে ধরে থাকে আরিফকে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম টানাপোড়েনে তাদের গল্প শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠে এক অপূর্ণ প্রেমের কাহিনী।
এখানে প্রেম কেবল দু-জন মানুষের আকর্ষণ নয়; বরং এটি হয়ে উঠেছে প্রতিশ্রুতি, ত্যাগ, সংগ্রাম ও অদম্য বিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি। নদীর জলে সূর্যাস্ত যেমন চিরন্তন প্রতিফলন রেখে যায়, তেমনি তাদের ভালোবাসা থেকেও যায় অমর হয়ে- অশ্রু আর স্মৃতির মাঝে।
“ভালোবাসার অমর অশ্রু” পাঠকের হৃদয়ে বেদনার স্পর্শ রেখে যাবে, আবার একইসাথে বিশ্বাসও জাগাবে; সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো মরে না, তা কেবল রূপ বদলায়, অমর হয়ে থাকে সময়ের স্রোতে।