দেড়শ পৃষ্ঠা বা ত্রিশ-বত্রিশ হাজার শব্দে লেডি গোয়েন্দা জেরিন সিরিজের চরিত্রগুলোকে বিচার করা সম্ভব নয়। দীর্ঘ ছয়-সাত বছর ধরে এই সিরিজের চরিত্রগুলোকে ধাপে ধাপে নির্মাণ করা হয়েছে। তাদের ভেতরে সূক্ষ্ম শেডিং যোগ করা হয়েছে। ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ কেবল শুরু মাত্র।
এই সিরিজে আমরা পাই এক নারী গোয়েন্দাকে, যার ভেতরে আছে টানাপোড়েন, ক্ষোভ, সাহস ও সংগ্রাম। নারী হওয়ার কারণে সমাজে তাকে অনেকসময় প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়া হয়নি; আর সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ তার চরিত্রকে করেছে আরও শক্তিশালী। সমাজ, পরিবার ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব; সবই এই সিরিজের গল্পে জায়গা করে নিয়েছে। একজন নারী হিসেবে দৃঢ়, স্বতন্ত্র এবং তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন চরিত্র নির্মাণই ছিল লেখকের প্রধান লক্ষ্য।
ভাবুন তো–
একটি মেয়ে, যার বাবাকে খুন করা হলো; এরপর মায়ের সঙ্গে তাকে পালাতে হলো থাইল্যান্ডের গহিন পাহাড়-অরণ্যে। প্রাণভয়ে লুকিয়ে থাকা সেই দিনগুলোতে নিজেকে তৈরি করেছে সে। মাফিয়ার ছায়া তাড়া করেছে বারবার, আর পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে এক দেশ থেকে অন্য দেশে। এই অভিজ্ঞতাই জেরিনকে তৈরি করেছে আজকের রূপে।
জেরিনের সঙ্গে সঙ্গে সিরিজের অন্যান্য চরিত্রও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এতটাই যে, লেখক অনেকের জন্য আলাদা গল্পও লিখেছেন। কারণ প্রতিটি চরিত্রের মধ্যেই লুকিয়ে আছে নিজস্ব ইতিহাস, নিজস্ব ট্র্যাজেডি, নিজস্ব রহস্য।
এই গল্প পাঠককে জানাবে জেরিনের ভেতরকার মানুষটিকে, তার কর্মপদ্ধতি ও চিন্তার জগতকে। বলা যায়, এই গল্প দিয়েই জন্ম নিলো আমাদের সাহিত্যে এক নতুন থ্রিলার সিরিজের।