শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক লুৎফুর রহমান শিক্ষক হিসেবেই শুধু নয়, একজন মানবদরদি, সমাজহিতৈষী ও ন্যায়ের প্রতীক হিসেবে আজও স্মরণীয়। বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের নানাপর্বে তাঁর ভূমিকা এবং মুক্তিযুদ্ধে আত্মবলিদান তাঁকে ইতিহাসের কাছে অমর করে রেখেছে। বন্ধু, সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ী, ছাত্র প্রমুখের স্মৃতিচারণায় তাঁর মানবসত্তার পূর্ণ পরিচয় পাওয়া যায়। স্মৃতিঅর্ঘ্য ছাড়াও বর্তমান গ্রন্থে জীবন-পরিচয়, উৎসর্গীকৃত কবিতা ও আলোকচিত্রের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে তাঁর জীবন ও কর্মদর্শনের বহুমাত্রিক দিক। একটি মহৎপ্রাণ কী করে হাজারো মনে অপরিসীম শ্রদ্ধায় স্থান করে নিতে পারে, তার অনিন্দ্য প্রীতিস্পর্শ অন্যের হৃদয়ে জাগিয়ে দিতে পারে প্রাণের প্রদীপ-স্মরণগ্রন্থটি তারই বিনম্র নিবেদন। অধ্যাপক লুৎফুর রহমানের জীবনের বহু মানবিক ও কল্যাণধর্মী ঘটনা যে ছবি এঁকে গিয়েছে সমাজমনে-জীবনসাধনার পথে তা সবার জন্যই হতে পারে অনুপ্রেরণার অপরিমেয় উৎস।
সম্পাদক-পরিচয়
জয়দুল হোসেন (জ. ১৯৫৫) কবি, মুক্তিযুদ্ধ-গবেষক ও সংস্কৃতি-সংগঠক। সাহিত্য একাডেমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-র সভাপতি। কবিতা ও ছড়া রচনা, ফোকলোরচর্চা, মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা, স্থানীয় কীর্তিমানদের স্মরণে স্মারকগ্রন্থ সম্পাদনা-সর্বোপরি প্রগতিশীল সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চায় উৎসর্গিত। গ্রন্থসংখ্যা ২৫। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। ছড়া: স্বরবৃত্তে স্বরাঘাত (১৯৮৮); কবিতা: ভালোবাসার কবিতা (১৯৯৭), পূর্ণদৈর্ঘ্য কবিতা (২০০৪), সাম্যবাদী মন (২০১৩); প্রবন্ধ-গবেষণা: মুক্তিযুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া (২০১১), অবিভক্ত বাংলার অসমাপ্ত বিপ্লব (২০১৬), ধর্মতীর্থ গণহত্যা (২০১৮), গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা (২০২০); জীবনী: খান মোহাম্মদ ফারাবী (১৯৯৫) প্রভৃতি।
ত্রিপুরা রাজ্য সরকার কর্তৃক অদ্বৈত মল্লবর্মণ সম্মাননা (২০০১) অর্জন।
মামুন সিদ্দিকী (জ. ১৯৭৮) প্রাবন্ধিক ও গবেষক। বাংলা একাডেমির গবেষণা কর্মকর্তা। উনিশ ও বিশ শতকের বাংলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাস এবং মুক্তিযুদ্ধ ও মানববিদ্যা তাঁর গবেষণার ক্ষেত্র। গ্রন্থসংখ্যা ৩০। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। প্রবন্ধ: বাঙালির সংস্কৃতি সাধনা (২০১৮), মুক্তিযুদ্ধের অজানা ভাষ্য (২০১৭), রবীন্দ্রনাথ: গল্পসল্প (২০১১); জীবনী: ভাষাসংগ্রামী মাহবুব উল আলম চৌধুরী (২০১২), শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক (২০১৬); গবেষণা: কুমিল্লায় ভাষা আন্দোলন (২০০৪), আবদুল রসুল ও বাংলার রাজনীতি (২০২৪), ১৯৭১: কুমিল্লা পুলিশ লাইন্স (২০১৭)।
মুক্তিযুদ্ধের অজানা ভাষ্য গ্রন্থের জন্য কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার (২০১৭) এবং আবদুল রসুল ও বাংলার রাজনীতি গ্রন্থের জন্য বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদ পুরস্কার (২০২৩) অর্জন।