Category:ইহুদী জাতির ইতিহাস
সুয়ারেজ ১৯৪০ ও ১৯৫০-এর দশকে সংঘটিত এক চমকে দেওয়া জায়নবাদী সন্ত্রাস অভিযানের বিবরণ দিয়েছেন, যা তার লক্ষ্যপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়ানো যেকোনো পক্ষকে নিশানা করেছিল—সে ব্রিটিশ সরকার হোক, প্যালেস্টাইনের স্থানীয় অধিবাসী হোক বা ইহুদিরাই হোক। প্রকৃতপক্ষে সুয়ারেজ জায়নবাদের তথাকথিত মূল উদ্দেশ্য—ইহুদিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়কে নিছক এক নিন্দনীয় প্রতারণা হিসেবে খারিজ করেছেন এবং দেখিয়েছেন, এই বর্ণবাদী-জাতীয়তাবাদী আন্দোলন প্রকৃত অর্থে গভীরভাবে ইহুদি-বিরোধী। জায়নবাদ তার রাজনৈতিক লক্ষ্যপূরণ করেছে নিপীড়িত ইহুদিদের কল্যাণে নয়, বরং তাদের ক্ষতির বিনিময়ে।
*
প্যালেস্টাইনে তথাকথিত ‘সংঘাত’ কেন শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চলছে এবং এর কোনো সমাধান এখনো দিগন্তে দেখা যাচ্ছে না—এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে সুয়ারেজ এমন এক বিশাল দলিলভাণ্ডার খুঁজে দেখেছেন, যা এর আগে খুব কমই গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হয়েছিল। প্রচলিত গণমাধ্যমে যেভাবে এটিকে আরব বনাম ইহুদি দ্বন্দ্ব হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, তিনি সেই বয়ানকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। ইতিহাসের দলিল-প্রমাণ দিয়ে তিনি দেখিয়েছেন—যা সৎ ও অবহিত পর্যবেক্ষকের কাছে আজকের বাস্তবতা থেকেও স্পষ্ট—পুরো এই করুণ ইতিহাস আসলে ইউরোপীয় এক বসতি স্থাপনকারী আন্দোলনের সহিংস দখলদারির গল্প, যা তার লক্ষ্যকে আড়াল করেছে এক ধরনের ‘মেসিয়ানিক অধিকার’-এর ভণ্ড দাবির আড়ালে। এই আন্দোলনের নাম—জায়নবাদ।
আজকের এই আপাত-দুরূহ ও দীর্ঘস্থায়ী অচলাবস্থা আসলে জায়নবাদের ‘অসমাপ্ত কাজ’— একটি ইসরাইলি রাষ্ট্র নির্মাণ, যা এখনো পূর্ণ হয়নি। মূলত এই ‘সংঘাত’ না জটিল, না অসাধনীয়। কিন্তু এর অবসান ঘটাতে হলে জায়নবাদের ভুয়া বয়ানকে ভেঙে ফেলা অপরিহার্য। সুয়ারেজের প্রচেষ্টা—ঐতিহাসিক দলিল উন্মোচন করে সেই বয়ানকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেলা।
Report incorrect information