সিম্বোলজির বিশ্বখ্যাত প্রফেসর রবার্ট ল্যাংডন এবার ইউরোপের চেক রিপাবলিগের মায়াবী রাজধানী প্রাগ শহরে পা রাখলো এক যুগান্তকারী বক্তৃতা শোনার জন্য। বক্তা বিখ্যাত নোয়েটিক বিজ্ঞানী ক্যাথারিন সলোমন, যার সাথে ল্যাংডনের মাত্রই প্রেম শুরু হয়েছে। এক বিস্ফোরক বই প্রকাশ করতে চলেছে ক্যাথারিন; বইয়ের পাণ্ডুলিপিতে মানুষের মন ও চিন্তাপ্রক্রিয়া নিয়ে এমন সব আবিষ্কার রয়েছে যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাসকে নড়বড়ে করে দেবে।
কিন্তু হঠাৎই প্রাগে ঘটে যায় এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড। মুহূর্তেই নিখোঁজ হয়ে যায় ক্যাথারিন, সঙ্গে হারিয়ে যায় তার সেই পাণ্ডুলিপি। ল্যাংডন নিজেকে আবিষ্কার করলো এক ক্ষমতাধর সংঘের শিকার হিসেবে, তার পিছু নেয় এক আততায়ী, যাকে তুলে আনা হয়েছে প্রাগের প্রাচীনতম পৌরাণিক কাহিনি থেকে।
প্রাগ থেকে লন্ডন, লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্ক, ঘটনার জাল ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। মরিয়া হয়ে ল্যাংডন খুঁজতে থাকে ক্যাথারিনকে; দরকার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর। তাকে চষে বেড়াতে হয় বিজ্ঞানের অত্যাধুনিক জগৎ আর প্রাচীন কিংবদন্তির দুনিয়া। শ্বাসরুদ্ধকর দৌড় শেষে ল্যাংডন উন্মোচন করে এক ভয়ংকর সত্য- পায় এমন এক গোপন প্রজেক্টের সন্ধান, যা কিনা চিরতরে পাল্টে দেবে মানবজাতির ধারণা।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক ড্যান ব্রাউনের কলমে ফিরে এলো রবার্ট ল্যাংডন, তার ষষ্ঠ অ্যাডভেঞ্চার এ যাবৎ লেখকের দুর্দান্ততম উপন্যাস। এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার মতো, এমন লেখনি কেবল ড্যান ব্রাউনের
মার্কিন থ্রিলার লেখক ড্যানিয়েল গেরহার্ড ব্রাউনের জন্ম ১৯৬৪ সালের ২২ জুন। ড্যান ব্রাউন নামেই বিখ্যাত এই লেখকের জন্মস্থান যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারের এক্সিটারে। তাঁর বাবা বিখ্যাত গণিত শিক্ষক রিচার্ড জি. ব্রাউন ফিলিপস এক্সিটার একাডেমিতে পড়াতেন। এই সূত্রে ড্যান এই একাডেমি থেকেই গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। এরপর আমহার্স্ট কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন তিনি। ছোটবেলায় সংগীতের প্রতি ঝোঁক থাকায় ১৯৮৬ সালে পেশাদার সংগীতশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তবে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জনে ব্যর্থ হন। ১৯৯৪ সালে সিডনি শেলডন এর লেখনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ড্যান লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন। উপন্যাস হিসেবে ড্যান ব্রাউন এর বই 'ডিজিটাল ফোরট্রেস' প্রকাশিত হয় ১৯৯৬ সালে, সেটাই ছিল তাঁর প্রথম লেখা। পাঠক বইটি সাদরে গ্রহণ করায় আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ২০০৩ সালে প্রকাশিত 'দ্য ভিঞ্চি কোড' বিশ্বজুড়ে তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায়। ক্রিপ্টোগ্রাফি বা সাংকেতিক চিহ্নের রহস্যময়তা, কী, কোড এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলোর সন্নিবেশ তাঁর রচনাগুলোকে করেছে আরো আকর্ষণীয়। রবার্ট ল্যাংডনের চরিত্রটিকে কেন্দ্রে রেখে তিনি দুঃসাহসিক সব অভিযানের রূপায়ণ করেছেন তাঁর লেখায়। ড্যান ব্রাউন এর বই সমূহ বিশ্বজোড়া থ্রিলার পাঠকদের জন্য যেন সোনার খনি। তাঁর রচনায় বুঁদ হয়ে থাকা পাঠকেরা সাংকেতিক রহস্যময়তার জন্য ড্যান এর রচনার সমাদর করেন। পাঠকনন্দিত ড্যান ব্রাউন এর বই সমগ্র হলো 'ডিসেপশন পয়েন্ট', 'এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস', 'দ্য লস্ট সিম্বল', ' ইনফার্নো' ও 'অরিজিন'। তাঁর লেখা বই বিশ্বের ৫২টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং বিক্রি হয়েছে ২০০ মিলিয়নেরও বেশি কপি। এছাড়াও 'এঞ্জেলস এন্ড ডেমন্স', 'দ্য ভিঞ্চি কোড', এবং 'ইনফার্নো' পেয়েছে চলচ্চিত্র রূপ। যদিও তাঁর রচনা নিয়ে ধর্মতত্ত্ববিদেরা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন, তবে ড্যান তাঁর রচনাকে ধর্মের রহস্যময়তার নতুন এক দিক হিসেবেই বর্ণনা করেছেন।