আল্লামা আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহইয়া রহ. স্মারকগ্রন্থ
পৃষ্ঠা : ৭১২। ৮০ গ্রাম অফহোয়াইট। বোর্ড বাধাই।
স্মারকে লিখেছেন দেশের খ্যাতিমান ও শ্রদ্ধাভাজন আলেম, লেখক, শিক্ষাবিদ ও মরহুম আল্লামার প্রিয় উস্তায, সাথী, সহকর্মী, শিষ্য ও অনুরাগীবৃন্দ। সবদিক মিলিয়ে একটি চমৎকার তথ্যবহুল গ্রন্থ। পাঠক এতে খুজে পাবেন, সময়ের বিভিন্ন দরকারি তথ্য উপাত্ত ও জ্ঞান-গবেষণার অনন্য দিক নির্দেশনা।
আল্লামা নুর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, বেফাকের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ও মালিবাগ জামিয়ার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল মরহুম আল্লামা আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহইয়া রহ. ছিলেন আদর্শ জাতি গঠনের অন্যতম দিকপাল৷ জাতীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন কাজে তিনি ছিলেন আমার একান্ত অনুচর, দক্ষিনহস্ত৷ জাতীয় দূর্যোগে অনেকেই ভড়কে যান৷ লোভে, ভয়ে পরাস্ত হয়ে পড়েন৷ কিন্তু আবুল ফাতাহ সবসময়ই দৃঢ়চেতা এবং জাতিকে সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়ার ক্ষেত্রে ছিলেন অবিচল৷
তিনি ছিলেন আকাবির ও আসলাফের অনুপম নমুনা৷ সাহাবীদের জামাতের উপমা৷ তার অন্তর্ধানে জাতি বিরাট এক ব্যক্তিত্বকে হারিয়েছে৷ এই ক্ষতি কখনোই পূরণ হবার নয়৷ তিনি সুউচ্চ চিন্তাচেতনা লালন করতেন৷ আমাদেরকে আল্লামার লালিত চেতনাকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে এবং তার আজীবন অনুসৃত আদর্শকে চর্চা করতে হবে৷ তার মত ইসলামী স্কলার ও বুদ্ধিজিবী, নির্লোভ মহামানব বর্তমান বস্তুবাদী পৃথিবিতে সত্যই বিরল৷
বৃহস্পতিবার ঢাকার জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ মাদরাসা মিলনায়তনে আয়োজিত আল্লামা আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহইয়া রহ. জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা ও স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জামিয়া রাহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, আজ সবাই দৃশ্যমান হতে চায়৷ কিন্তু পিছনে থেকে কাজ করা কর্মীর বড়ই অভাব৷ আল্লামা আবুল ফাতাহ সর্বদা নির্মোহ থেকে অগোচরে কাজ করেছেন৷ বেফাকের আজকের অবস্থানের পিছনে তার ভূমিকা অন্যতম৷ তিনি অনেক মৌলিক রচনাবলী জাতিকে উপহার দিয়েছেন৷ কিন্তু তার সময়ে বাংলা চর্চা ছিল কষ্টসাধ্য।
Title
আল্লামা আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহইয়া রহ. স্মারকগ্রন্থ
মাওলানা আবুল ফাতাহ্ মুহাম্মাদ ইয়াহ্ইয়া রাহ. ১৯৫৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানাধীন মালিডাঙ্গা গ্রামে ফরায়েযী বংশের এক আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মাওলানা মিয়া হুসাইন রাহ.। নানার বাড়ি হালুয়াঘাট, সেখানকার ‘কুতিকুরা করুয়াপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে’থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিজ্ঞান নিয়ে অধ্যয়ন করেন। এরপর মাদরাসায় ভর্তি হন এবং ১৯৮২-৮৩ সালে তাকমিল (স্নাতকোত্তর) সমাপন করেন জামিয়া শারইয়্যাহ, মালিবাগ, ঢাকা থেকে। কওমি শিক্ষাবোর্ডের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে ৪র্থ স্থান অধিকার করেন। কর্মজীবনে সিলেট জেলার গাছবাড়ী মাযাহিরুল উলূম ও জামিয়া শামসুল উলূম (পীরজঙ্গী) মাদরাসায় মুহাদ্দিস ছিলেন এবং মালিবাগ জামিয়ায় ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া আমৃত্যু বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড-এর সহকারী মহাসচিব পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। অর্থনীতির উপরে ‘ইসলামী অর্থনীতির আধুনিক রূপায়ণ’, বেফাকুল মাদারিসের অধীনে ফযীলত ১ম বর্ষে পাঠ্য, রাষ্ট্র বিজ্ঞানের উপরে ‘আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইসলাম’, ‘হাদীস অধ্যয়নের মূলনীতি’, ‘দারুল উলূম দেওবন্দ : ইতিহাস ঐতিহ্য ও অবদান’, (ফযীলত ২য় বর্ষে পাঠ্য), ‘স্রষ্টা ও তাঁর স্বরূপ সন্ধানে’, ‘ইসলামের দৃষ্টিতে পীর-মুরিদী’, ‘মুজাহাদা ফী সাবীলিল্লাহ’সহ বহু মূল্যবান গ্রন্থ লিখে গেছেন। । তিনি ২০ মে, ২০১৭ সালে ঢাকায় ইন্তেকাল করেন।