নারীরা সমতা চায়। সমানাধিকার চায়। বাহিরে কাজ করতে চায়। অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হতে চায়। নিজেকে মেলে ধরতে চায়। তাদের শরীর, তাদের দেহ, তারা যাকে ইচ্ছা তাকে দেওয়ার স্বাধীনতা চায়। ঘরে বসে বাচ্চাকাচ্চা লালনপালন করা অনর্থক কাজ। স্বামীর অধীন থাকা অসহনীয় যন্ত্রণা, সাক্ষাত হলাহল পান। সংক্ষেপে বলতে গেলে এগুলোই নারীবাদের ভাষ্য।
এ কথাগুলো কি তারা এমনি এমনিই বলে? না, এর পেছনে আছে নির্দিষ্ট কিছু চিন্তা। কিছু দর্শন যা এদের ভিত গড়ে দিয়েছে। মানুষ, মানবস্বভাব, মানুষের চূড়ান্ত লক্ষ্য ইত্যাদি ব্যাপারে তাদের নির্দিষ্ট কিছু বলবার আছে। আদিকাল থেকে জিজ্ঞাসিত দার্শনিক প্রশ্নের কিছু সুনির্দিষ্ট উত্তর আছে। এই চৈন্তিক ও দার্শনিক অববাহিকার ওপরই গড়ে উঠেছে নারীবাদের সুউচ্চ হর্ম্য। নারীবাদী চিন্তা চেতনার বিপুল-বিস্তৃত বটবৃক্ষের এরাই হচ্ছে শেকড়, যা ভেতর থেকে তাদেরকে পুষ্টি যোগায়।
এ সকল দার্শনিক ও চৈন্তিক বুনিয়াদ না জানলে নারীবাদকে প্রশ্ন করা যাবে না, বোঝা যাবে না কেন নারীবাদ আগাগোড়া প্রকৃতিবিরুদ্ধ, মানবস্বভাব-বিরোধী এক মতবাদ, যা কিছু আকর্ষণীয় কথার মোড়কে নিয়ে যায় এমন এক দিকে যার সর্বশেষ মঞ্জিল মানুষ ও সভ্যতার ধ্বংস। বলা হয় সঠিক প্রশ্নেই লুকিয়ে আছে সঠিক উত্তরের বীজ। নারীবাদকে প্রশ্ন করতে আমাদের জানতে হবে এর শুরুটা, কোথা থেকে প্রারম্ভ, কিই-বা এর লক্ষ্য, কোনদিকে তার গন্তব্য। এ বইটি সেই প্রশ্ন করার-ই একটি প্রচেষ্টা।