এই পুস্তকের তৃতীয় সংস্করণের সমস্ত কপি ইতিমধ্যে নিঃশেষ হয়ে গেছে। বাজারে পুস্তকটির বেশ চাহিদা রয়েছে। সুতরাং এর চতুর্থ সংস্করণ প্রস্তত করা হলো।
আমাদের সুপ্রীম কোর্ট ও ভারতের সুপ্রীম কোর্টের হালনাগাদ প্রাসঙ্গিঁক কিছু সিদ্ধান্ত সংযোজন করা হলো। সম্মানিত পাঠক ও ব্যবহারকারীদের পূর্বের মতই এই সংস্করণও একইরুপ সহায়তা করবে বলে আশা রাখছি।
২৪ মে, ২০২৫
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ বাতিল করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ প্রণীত হওয়ার পর ২৭—১২—২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে কার্যকর হয়েছে। নতুন আইনে মাদকদ্রব্যের সংজ্ঞা সংশোধন করত ব্যাপক করা হয়েছে এবং বেশ কিছু মাদকদ্রব্য অন্তর্ভুক্তকরণসহ মাদকদ্রব্যের উপজাত বা যৌগ এবং সেগুলোর মিশ্রণে প্রস্তুত করা দ্রব্য, সল্ট, আইসোমার, এনালগ, অ্যাগনিস্ট—কে আইনে অন্তর্ভুক্তকরণ, ইয়াবা ব্যবসার শাস্তি বৃদ্ধিকরণ, শিশা বার নিয়ন্ত্রণের জন্য বিধান রাখা হয়েছে। পূর্ববর্তী আইনটি রহিত করা হলেও রহিত হওয়ার আগে উক্ত আইনের অধীন প্রণীত বিধি, জারিকৃত প্রজ্ঞাপন, প্রদত্ত আদেশ, নির্দেশ, অনুমোদন, সুপারিশ বা কার্যক্রম নতুন আইনের অধীনে প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
পূর্ববর্তী আইনের অধীনে দায়েরকৃত অনিষ্পন্ন মামলা উক্ত আইনের অধীনেই পরিচালিত হবে। নতুন আইনে মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধের ভিডিও, স্থিরচিত্র, কথাবার্তার টেপ রেকর্ড বা ডিস্ক সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য। আবার ৪৪ ধারা বিলুপ্ত করে নতুন ৪৪ ধারা প্রতিস্থাপন করত অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত কর্তৃক মাদকদ্রব্য অপরাধসমূহ বিচার করার বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে এবং ৪৫ ধারা বিলুপ্ত করে ৪৭ ধারায় এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত কর্তৃক জামিনের বিধান সন্নিবেশিত হয়েছে।
বর্তমান আইনে ৪৮ ধারা প্রতিস্থাপনপূর্বক কার্যত স্বাভাবিক পদ্ধতিতে ফৌজদারি কার্যবিধির অধ্যায়—২০ এবং অধ্যায়—২৩ ও অধ্যায়—২২ এর অধীনে বিচারের বিধান দেওয়া হয়েছে। এ ধারার বিধান অনুযায়ী ৫(পাঁচ) বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডযোগ্য মামলার বিচারে ফৌজদারি কার্যবিধির অধ্যায়—২২ এর বিধানাবলি অনুসরণ করতে হবে। উল্লেখ্য যে, ধারা ২৬০ হতে ২৬৫ উক্ত অধ্যায়—২২ এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই ধারাগুলো অনুসরণ করার সময় অবশ্যই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর ৫৪ ধারার বিধান মোতাবেক উক্ত ২৬০ হতে ২৬৫ ধারার বিধানের সাথে অত্র মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের কোনো বিধান সাংঘর্ষিক হলে অত্র আইনের বিধানটুকু কার্যকর রাখতে হবে। এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত কর্তৃক বিচারের সময়সীমা সর্বোচ্চ ১৩৫ কার্যদিবস করা হয়েছে।
মামলা প্রস্তুত করা, অভিযুক্তদের বিচারে সোপর্দ করা, বিচারে অভিযোগ প্রমাণ করা প্রভৃতির দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে বাদিপক্ষের, যার মধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ বাহিনী, র্যাব এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ অন্তর্ভুক্ত বিধায় বাদিপক্ষকে সংশ্লিষ্ট পদ্ধতি ও প্রণালী সম্পর্কে সচেতন থাকা প্রয়োজন। কারণ মাদকদ্রব্য ও নিষিদ্ধ ওষুধের অপব্যবহার ও অবৈধ ব্যবসার ভয়াবহ পরিনতির আলোকে বাদিপক্ষের দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে, প্রতিটি পদক্ষেপে স্বচ্ছতা প্রদর্শন করা যেন মামলা প্রমাণের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ত্রুটি বিচ্যুতি না ঘটে।
তাই মাদকদ্রব্যের অপব্যবহারকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ ও পরিশেষে নির্মূল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ পুস্তকে প্রতিষ্ঠিত ত্রুটি—বিচ্যুতি গোচরীভূত করেই বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্ট ও ভারতের সুপ্রীম কোর্ট ও হাইকোর্টের প্রাসঙ্গিক সিদ্ধান্ত, রুলিং, পর্যবেক্ষণ প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।