এবার জীব-জন্তুদের গল্প। আমাদের বাড়ির মধ্যে রয়েছে কতরকমের জীব, কখনও কখনও জন্তু। পায়রা, ময়না, টিয়া, ধনেশ, খরগোশ, কুকুর, বেড়াল, টিকটিকি, গোরু। বাড়ির বাইরে তাকাও দেখবে উড়ন্ত কতরকম পাখি। ঘুঘু, কাক, টিয়া। রাত্রে পেঁচা, বাদুড় (যদিও এদের পাখি বলা যায় না), জঙ্গলে শেয়াল, শুয়োর, বাঘ, গণ্ডার কতরকম বাঘের ছড়াছড়ি। চিড়িয়াখানায় পাওয়া যাবে আরও একশো রকমের পাখি- আবার যে পাখি উড়তে পারে না তাদেরও দেখা মিলবে। আমরা ছোটবেলায় পড়তাম শিকারের কত সাহসের কাহিনী। এখন হাওয়া উল্টোদিকে।
এখন শিকারিদের দেখা পাওয়া ভার। অনেক জন্তু শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধও। তবু হাতি খেপলে বা কোনো বাঘ মানুষ মারতে শুরু করলে তাদের মারবার জন্য এখনও শিকারিদের দরকার হয়।
এই গল্প সংকলনে ইচ্ছে করেই শিকার-কাহিনী প্রায় বাদই দেওয়া হয়েছে। দু-একটিতে শিকারের কথা থাকলেও শিকার-কাহিনীর জন্য সেগুলি সংকলিত হয় নি। সেগুলির মজা অন্যরকম। আমাদের দেশের এমন কোনো লেখক বোধহয় পাওয়া যাবে না, যাঁরা কোনো-না-কোনো সময়ে জন্তু বা পাখি নিয়ে লেখেন নি। কিন্তু সব লেখাই তো আর ছাপানো যায় না, তাই যেগুলি আমার কাছাকাছি পেলাম, আর যেগুলি সংগ্রহ করতে পারলাম সেগুলি এক সঙ্গে করে দেওয়া গেল এই আশায় যে তোমরা যারা এই বই পড়বে ভাবতে চেষ্টা করবে তোমাদের দেখা জীবজন্তু পাখিদের নানারকম ব্যবহারের কথা। তোমরা যদি একটা খাতায় তোমাদের পোষা বা দেখা প্রাণীদের কথা রোজ লিখে রাখো তাহলে তোমরা কতরকম বৈচিত্র্যের সন্ধান পাবে। আমাদের দেশের বৈজ্ঞানিক গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য কেবল কীট-পতঙ্গদের দেখে, তাদের ব্যবহার লিখে রেখে ছবি তুলে পৃথিবীর বিখ্যাত বিজ্ঞান জার্নালে লেখা পাঠিয়ে বিখ্যাত হয়েছিলেন। পাখিদের নিয়ে বই লিখেছেন সলিম আলি এবং আরও কত মানুষ। এগুলো সংগ্রহ করে পড়তে চেষ্টা করবে। হয়তো অত দরকার নেই সকলের, তবু পাখি দেখা জন্তু দেখা তাদের নিয়ে চর্চা করা এখন পৃথিবীর বহু দেশের ছেলেমেয়েদের হবি।
এই সংকলনে রূপকথার জীবজন্তুদেরও দেখা যাবে কম। কোনো এক সময়ে রূপকথার বা কল্পনা জগতের জীবজন্তু নিয়ে একটা সংকলন হয়তো করা যাবে, তখন সেখানে পাওয়া যাবে ব্যঙ্গমা ব্যঙ্গমী, ঘ্যাঁঘাসুর ইত্যাদিদের। পাওয়া যাবে খোক্কশদেরও দেখা।