ক্যারোলিয়া আর অনীল নিজেদের ঘরে গিয়ে হাতে যা সময় আছে তাতে আধঘণ্টা রেস্ট করে আবার ক্যাম্পের মাঠে যাবে। অবশ্য ঘর না বলে সেগুলো দশ বাই দশের ছোট ছোট খুপরি বলাই ভালো। একটা বেড আর কিছু জিনিসপত্র। একখানা জানলা। জানালার বাইরে যতদূর চোখ যায় ধূ-ধূ প্রান্তর। এই ক্যাম্পাসের উলটো দিকে আরও কিছু সেনা ব্যারাক আছে তবে সেগুলোর সঙ্গে এগুলোর তেমন একটা সংযোগ নেই। মূলত সেনাব্যারাকের সেনারাই এই পুরো ক্যাম্পাসটার নিরাপত্তার দায়িত্বে।
হল ঘর থেকে তাদের ঘরের দিকে যেতে গেলে পথে একটা ছোট্ট ঘর আছে, যেটা মৃণাল রুদ্র ও মালহোত্রা অফিসের কাজে ব্যবহার করেন। অনীল আর ক্যারোলিয়া যখন ঘরের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল, তখন ঘরের ভিতর থেকে কারও ভাঙা রাজস্থানী টানে একটা গলা ভেসে আসে, অন্য ভারী গলাটা যদিও চেনা। মৃণাল রুদ্র।
সে আবার রাজস্থানী ভাষায় বলে, ‘‘পাকিস্তান সেকেন্ড জেনেরেশন এজেন্ট ভারতে প্ল্যান্ট করছে। কিছু বর্ডার ক্রস করে চলেও এসেছে। সাবধান থাকা প্রয়োজন!’’
‘‘ও মাই গড!’’ মৃণাল রুদ্রর গলা যেন কেঁপে যায়। তিনি বলে ওঠেন, ‘‘সেকেন্ড জেনেরেশন। আর ইউ সিওর? এত ডেডিকেটেড এজেন্ট ওরা পাচ্ছে কোথায়?’’
‘‘ব্ল্যাক টাইগার কাভি গলত নেহি হোতা, স্যার! আপনিও তা জানেন।’’ রাজস্থানী লোকটা বলে।
‘‘আর কিছু নিউজ?’’
‘‘খাম্মাগনি। বাস ইতনা হি...’’
ক্যারোলিয়ারা দেখতে পায় সাদা কুর্তা-ধুতি আর মাথায় রঙ-বেরঙের পাগড়ি পরা বয়স্ক লোক ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। ক্যারোলিয়া আর অনীল কিছুই হয়নি এরকম ভাব করে হেঁটে নিজেদের ঘরের দিকে যেতে থাকে। লোকটাও তাদের গ্রাহ্যই করে না। কিছুটা এগিয়ে গিয়ে নীচু গলায় অনীল জিজ্ঞাসা করে, ‘‘কিছু বুঝলে?’’
ক্যারোলিয়া ফিসফিসে বলে, ‘‘বেশি নয়। তবে এটুকু বুঝলাম এই রাজস্থানী লোকগুলো আসলে পাকিস্তান থেকে সিক্রেট ইনফো নিয়ে এসে মৃণাল রুদ্রকে দেয়। ব্ল্যাক টাইগার কোনও এজেন্ট হবে। তবে ‘সেকেন্ড জেনেরেশন এজেন্ট প্ল্যান্ট করছে’ মানে কী?’’
--- প্রখর রুদ্র সিরিজের পলিটিক্যাল স্পাই থ্রিলার ‘এজেন্ট অফ জটায়ু’