‘বেঁচে থাকার উৎসব’ বইটি আমার প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ। এ গ্রন্থটিকে আমার ছাত্র জীবন থেকে আজ অব্দি লিখিত কবিতার সংকলনও বলা চলে। বাণিজ্যিক কোন উদ্দেশ্যে বইটি লেখা বা ছাপানো হয়নি। তবে কেউ যদি এটি সংগ্রহ করতে চায় তবে তাকে নিজ দায়িত্বে সংগ্রহ করতে হবে। প্রতিটি কবিতা আমার সাথে বেড়ে উঠেছে। একজন মাকেও তার সন্তানকে দশ মাস ধারণ করতে হয় আর সৃষ্টি কি এত সহজ! আমি স্রষ্টা নই তবে আমার হৃদয়ের তাড়নায় আমি লিখি। প্রতিটি লেখা আমার কাছে সন্তান তুল্য।এই বইয়ে গ্রন্থিত কবিতাগুলো পাঠককে কখনো শৈশবে কখনো বা কৈশোরে নিয়ে যাবে এমনকি বিরহ বিস্মৃতি, ভালোবাস ও স্নেহে ভরিয়ে তুলবে। এখানে প্রিয় মানুষের বিরহে রয়েছে হাহাকার আবার প্রিয় মানুষটিকে কাছে পাওয়ার জন্য রয়েছে তীব্র আকাঙ্ক্ষা। একজন রক্ত মাংসের মানুষ যেভাবে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে আমার লেখাগুলো পরম যত্নে সেভাবে বেড়ে উঠেছে। মানুষ অতীতকে ভালোবাসে বলে বর্তমান সময়টাকে উপভোগ করতে পারে না। বর্তমান সময়টা অতীত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমানকে ভালবাসতে পারে না। প্রতিটি পাঠককে তার অতীত ও বর্তমানের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটাবে আমার লেখা কবিতাগুলো। আমার লেখা কোন কবিতাই বানানো নয় বরং প্রকৃতির দান। আমি কেবল সাদা কালো অক্ষরে কবিতাগুলোকে বাস্তবে রূপদান করেছি। লেখাগুলো যেভাবে শৈশব থেকে বেড়ে উঠেছে সেভাবেই পান্ডলিপি আকারে গড়ে তুলেছি। তাই এই কবিতাগুলোতে শৈশবের কাঁচা হাতের লেখার ছাপ রয়েছে আবার কৈশোরের চঞ্চলতা রয়েছে অপরদিকে পরিণত বয়সের আবেগও মিশ্রিত রয়েছে। প্রকৃতি, মা, প্রেমিকা, সন্তান বন্যা, খরা, সামাজিক অসংগতি কি নেই এই বইয়ে। একজন রক্তে মাংসে গড়া মানুষকে যে যে বিষয়গুলো স্পর্শ করে আমার কবিতাগুলো পড়লে প্রায় প্রতিটি বিষয়কেই পুনরায় নাড়া দেবে। লেখাগুলো পাঠ্যপুস্তকের ধরা বাধা কোন নিয়ম মেনে লেখা নয়। লেখাগুলো প্রাকৃতিকভাবে যেভাবে আমার মনে উদয় হয়েছে সেভাবেই লেখা হয়েছে। তাই লেখাগুলো কতটুকু শিল্পমান সম্পন্ন সময়ই বলে দেবে। যদিও আমার কিছু লেখা পূর্বে প্রকাশিত হয়েছিল তবে পূর্ণাঙ্গ বই আকারে এটিই আমার প্রথম প্রকাশিত কোন গ্রন্থ। ভবিষ্যতে যেন আমি আরো ভালো কিছু উপহার দিতে পারি আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আপনাদের দোয়া ও ভালবাসাই আমার পরম পাওয়া।
মুহম্মদ সোহেল আরমান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত সংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত তিতাস মেঘনা নদী বিধৌত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার চাটুয়াখলা গ্রামে মাতুলালয়ে ১৯৯০ সালের ৩১ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস একই উপজেলার পানিয়ারূপ গ্রামে।
পিতা মোঃ শফিকুল ইসলাম ও মাতা বেগম রুহেনা ইসলাম। তার হাতেখড়ি পানিয়ারূপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এর পর ঢাকার মিরপুর ১২ তে অবস্থিত ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ আদর্শ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন।জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ঢাকা কলেজ থেকে রসায়ন বিষয়ে অনার্স ও এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।তিনি চারুকণ্ঠ আবৃত্তি সংসদের একজন নিয়মিত সদস্য। ৩৭তম বিসিএস থেকে নন-ক্যাডার হিসেবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন বস্ত্র অধিদপ্তরে যোগদান করেন। কর্মজীবনের শুরুতে বরিশাল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, গৌরনদী, বরিশাল এ দীর্ঘ সাড়ে চার বছর অতিবাহিত করেন।বর্তমানে সিলেট টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট , সিলেটে কর্মরত আছেন। এছাড়াও রোটারী স্কুল অ্যান্ড কলেজে অতিথি শিক্ষক হিসেবে কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। তাঁর উল্লেখ্য যোগ্য যৌথ কাব্যগ্রন্থগুলো হচ্ছে: পাখিদের গান, বেলা শেষে, অনুভবে নীল জোৎস্না, এখানে মেঘ জমেছে। এছাড়াও 'সোনার তরী' নামে একটি যৌথ গল্প গ্রন্থ রয়েছে। তিনি 'ধানসিড়ি-২১', 'ধানসিড়ি-২২', 'ধানসিড়ি-২৩' নামে কলেজ ম্যাগাজিনের সম্পাদক ছিলেন। তিনি একজন ভ্রমণ পিয়াসু মানুষ। বই পড়তে ভালোবাসেন, ঘুরতে ভালোবাসেন। তিনি বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের 'পাঠচক্র-১৯ '-এর একজন সদস্য। তিনি সবাইকে নিয়ে সমৃদ্ধ আগামীর পথে এগিয়ে যেতে চান। তিনি ২০২১ সালে মাহছুমা জান্নাত মুন্নী এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ২০২২ সালে তাদের কোল আলো করে আসে সদাহাস্যোজ্বল মুহাম্মাদ মুনতাসির আরহাম।