কবিতা, মানুষের হৃদয়ের গভীরতম অনুভূতিগুলোর নিঃশব্দ ভাষ্য। প্রতিটি পংক্তি যেন আত্মার কান্না, প্রতিটি উপমা যেন স্মৃতির খাঁচায় বন্দি একটি নির্ভার পাখি, আর প্রতিটি কবিতা যেন জীবনের একেকটি অসমাপ্ত অধ্যায়। “তোমার স্পর্শে গোধূলি রঙিন” এমন এক কাব্য সংকলন, যেখানে ভালোবাসা, বিচ্ছেদ, প্রকৃতি, আত্মোপলব্ধি ও সময়ের করুণ অথচ সুন্দর এক মেলবন্ধন ঘটেছে।
এই সংকলনে অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি কবিতা লেখকের একান্ত আত্মদর্শনের প্রতিফলন। এখানে গোধূলির আবছা আলো যেমন প্রেমের পরশে রঙিন হয়ে ওঠে, তেমনি কখনো তা ভেসে যায় নিঃসঙ্গতা কিংবা না-পাওয়ার বিষণ্ন জলে। কবির কলমে উঠে এসেছে মানবজীবনের সুখ-দুঃখ, প্রেম-অপ্রেম, আশা-হতাশা, স্বপ্ন ও বাস্তবতার দ্বন্দ্ব। কখনো প্রেমিকার চোখের গভীরতা, কখনো জীবনের ক্লান্ত সন্ধ্যা, কখনো আবার আকাশের অসীমতা—সবকিছুতেই কবি খুঁজে পেয়েছেন এক রঙিন গোধূলি, যা শুধুই “তোমার” স্পর্শে রাঙিয়ে উঠেছে।
এই কাব্যগ্রন্থ পাঠকের অন্তরে এক সজীব আবেগের সঞ্চার করবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস। এতে ব্যবহৃত ভাষা সরল, হৃদয়গ্রাহী এবং উপমাগুলো অনন্য, যা পাঠককে টেনে নিয়ে যায় কবিতার গভীরতায়। কবিতা শুধু শব্দের সমাহার নয়, এটি অনুভবের ক্ষেত্র, হৃদয়ের একটি মুক্ত অঞ্চল। আর এই সংকলন সেই মুক্ত অঞ্চলে অবাধ বিচরণ করতে দেয়, যেখানে পাঠক নিজেকে খুঁজে পাবে, হারিয়ে যাবে আবার নিজেই ফিরে আসবে।
“তোমার স্পর্শে গোধূলি রঙিন” শুধুমাত্র একটি কাব্যগ্রন্থ নয়, এটি এক প্রেমের যাত্রা—যেখানে গোধূলি মানেই ভালোবাসার স্মৃতি, হারানোর ব্যথা, আর ফিরে পাওয়ার এক অদ্ভুত আশা। পাঠকের হৃদয়ে এই সংকলন আলোকপাত করুক, তা-ই আমাদের কামনা।
আকাশ আহমেদ ২০০৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার মহলগিরী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মোঃ ফিরোজ মিয়া এবং মাতা মোছাঃ আল্পনা খাতুন। বর্তমানে তিনি শাহীন স্কুল বকশীগঞ্জ শাখার নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি অদম্য ভালোবাসা লালন করে আসছেন। কবিতার প্রতি ভালোবাসা গড়ে ওঠে পারিবারিক প্রেরণায়, বিশেষ করে তাঁর দাদার সাহিত্যচর্চার প্রভাব থেকে তিনি গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হন। আকাশ মূলত প্রেম, প্রকৃতি এবং জীবনের সূক্ষ্ম অনুভব নিয়ে কবিতা লিখেন। তাঁর লেখার ভাষায় রয়েছে তরুণ মননের স্বচ্ছতা, হৃদয়ের গভীরতা এবং নিভৃত ব্যথার স্বর। ‘তোমার স্পর্শে গোধূলি রঙিন' তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ, যেখানে প্রেমের বহুমাত্রিক প্রকাশ—গভীরতা, অনুভব ও ভালোবাসার স্পর্শ— এক অনন্য কাব্যিক আবহে ধরা পড়েছে। অত্যন্ত অল্প বয়সেই নিজের একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করতে পারা তাঁর জন্য যেমন গর্বের, তেমনি এটিই তাঁর স্বপ্নপূরণের পথে প্রথম সাফল্য। তিনি বিশ্বাস করেন, একজন কবির কলম শুধু শব্দের বাহক নয়, অনুভবেরও দীপ্ত প্রকাশ। ভবিষ্যতে আরও গভীর সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে পাঠকের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নেওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি।