সময়কে তুলনা করা হয় নদীর স্রোতের সাথে । কারণ নদীর স্রোতের মতোই সময় কখনো বসে থাকে না গড়িয়ে চলে তার আপন গতিতে ।আর এই গড়িয়ে চলা সময়ের সাথে সাথে মানুষের জীবনটাও চলতে থাকে তার আপন নিয়মে। সেখানে তাকে পেরিয়ে আসতে হয় কত ঘাত-প্রতিঘাত, চড়াই-উৎরাই, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, শান্তি-অশান্তি, নীরবতা-কোলাহল সবকিছুর সংমিশ্রণের নামই জীবন। এক জীবনে কাউকে দেখা যায় পাওয়ার আনন্দে বিমোহিত আবার কেউবা না পাওয়ার বেদনায় মর্মাহত। কিন্তু এই এক জীবনে মানুষের চাওয়া-পাওয়ার হিসেব নিকেষে গরমিল থাকবেই। আর এর থেকে কারো জীবন যেমন ব্যতিক্রম নয় তেমনি আমারও।
সেই ছোটবেলা, যখন থেকে বুঝতে শিখি তখন থেকেই দেখে আসছি অন্য পত্রিকার সাথে আম্মা ও বড় বোনদের জন্য বাসায় সাপ্তাহিক ‘বেগম’ পত্রিকা রাখা হতো। লালরঙা উপর নীচ ও মাঝখানে আকর্ষণীয় ছবির প্রচ্ছদে পত্রিকাখানা নেড়েচেড়ে ও ছবি দেখতে ভালই লাগত। এর চেয়ে আরও দ্বিগুণ আকর্ষণীয় ছিল পত্রিকাটির ঈদ সংখ্যা। যখন পড়তে শিখলাম তখন থেকে ছোট ছোট লেখা ও কবিতা পড়তে শুরু করলাম। এক সময় যখন ‘কিশোর বাংলা’ প্রকাশিত হলো তখন ‘বেগম’ এর পাশাপাশি ‘কিশোর বাংলা’ও রাখা শুরু হলো। সেই থেকেই পত্রিকা পড়া ও লেখার সাথে সখ্যতার শুরু। ‘কিশোর বাংলা’ যদিও ছোটদের জন্য রাখা হতো কিন্তু সবাই ছিলেন এর পাঠক, বিশেষ করে আম্মা। আম্মার এতো বেশি পড়ার নেশা ছিল যে রান্না করার ফাঁকে ফাঁকেও দেখতাম বই পড়ছেন। এমন কি যখন বিদ্যুৎ ছিল না তখন সবাই ঘুমিয়ে পড়লে হারিকেন জ্বালিয়েও আম্মা বই পড়তেন যা স্মৃতিতে আবছা আবছা মনে পড়ে।