আমরা ইংরেজি শব্দের বানান মোটামুটি নিভুর্লই লিখতে চেষ্টা করি। মনে মনে একটু সংকোচ উঁকি দেয় বটেÑকী জানি কোথায় ভুল হয়ে যায়! ভুল হলে কী বলবে লোকে! তাই দুর্বলতা কাটাতে ডিকশনারি ঘাঁটি। শতভাগ নিভুর্ল হোক না—হোক ইংরেজি লিখতে মোটামুটি চেষ্টা তো থাকে! এই ইচ্ছাটুকুকে সম্মান না—জানিয়ে পারা যায় না! এবার একটু ভাবুনÑবাংলা লিখতে, পড়তে বা বলতে একেবারেই কি আমরা বেখেয়াল নই? শিক্ষক থেকে ছাত্র, অফিসের বড়ো সাহেব, কেরানি এবং এমন কি আমরা যারা সাহিত্য চর্চা করে যাচ্ছি, তারা বাংলাভাষার নামে কী লিখছি, কেন লিখছিÑএকবার উপলব্ধি করা দরকার মনে হয় না কি? বাংলা আমাদের মাতৃভাষা, বুকের রক্ত দিয়ে এই ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আমাদের পূর্বপুরুষরা। নিজের ভাষার জন্য তাদের অমিত ত্যাগ আমরা কি কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি? মনে হয় আমরা এ ক্ষেত্রে একেবারেই দায়িত্বহীন। লেখক ও কবি সঞ্জয় মুখাজ্জীর্ তার ব্যতিক্রম। বাংলাভাষার শুদ্ধ উচ্চারণ, ঠিক জায়গায় ঠিক শব্দটির প্রয়োগ এবং সর্বোপরি বাংলাভাষাবাসীদের শুদ্ধরূপে বানানটি লিখতে তিনি নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এই একাগ্রতা ও নিষ্ঠার প্রতিফলন দেখতে পাই পর পর মোট পাঁচটি বই প্রকাশ। এগুলো হচ্ছে ‘ছন্দে লিখি বানান শিখি’, ‘দুরন্ত সংলাপ—১’, ‘দুরন্ত সংলাপ—২’, ‘দুরন্ত সংলাপ—৩’ এবং এ বছর অমর একুশে বইমেলায় জলছবি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ‘চিরকুটি সংলাপ’; এই বইগুলোতে বালাভাষাকে শুদ্ধরূপে বলতে তার নিজস্ব পদ্ধতির সফল প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। আশার কথা হচ্ছে, পাঠক তার প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে। এবারে প্রকাশিত ‘চিরকুটি সংলাপ’ বইটিও পাঠকের ভালো লাগবে আশা করতেই পারি।
সঞ্জয় মুখার্জ্জী একাধারে কবি, গল্পকার ও শিশু সাহিত্যিক। জন্ম ১৮ জানুয়ারী ১৯৬৭, যশোর। লেখালিখি শুরু শৈশব থেকে। দেয়াল পত্রিকা, স্কুল ম্যাগাজিন ও স্থানীয় সংবাদ পত্রিকার সাহিত্য পাতায় তার লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হয়েছে। পরবর্তীতে তার বহুমুখী প্রতিভার বিকাশ ঘটেছে যশোরে সাংষ্কৃতিক পরিম-লে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর মাধ্যমে । বর্তমানে ঢাকায় বসবাস এবং সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট এক্সপার্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিটি ওয়াইড ইনক্লুসিভ স্যানিটেশন-এফএসএম সাপোর্ট সেল-এ।