Category:বাংলাদেশি আদিবাসী
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
বাংলাদেশের বৃহৎ বাঙালি জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি বিভিন্ন ভাষাভাষী ও নরগোষ্ঠীর জাতিসত্তার বসবাস ও সহাবস্থান রয়েছে। রাখাইন জাতি তাদের মধ্যে অন্যতম। এরা একটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীভুক্ত বিশেষ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। তাদের আবাস বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল কক্সবাজার, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলায়। এরা মূলত এদেশে সতেরো শতকের শেষ পাদে আগত যুদ্ধে পরাজিত শরণার্থী হিসেবে অভিবাসী। পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের [বার্মা] আরাকান, যা বর্তমানে রাখাইন স্টেট নামে অভিহিত সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে এদেশে এদের আগমন ঘটে। আর এদের হাত দিয়েই নতুন জনপদ গড়ে ওঠে এই ভূখণ্ডে। তাই এ জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিপ্রেক্ষিত রাজনৈতিক বিবেচনায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ নিঃসন্দেহে।
রাখাইনরা এদেশে বাঙালি ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর কাছে ‘মগ’ অভিধায় অভিহিত। কিন্তু রাখাইনদের কাছে ‘মগ’ শব্দটি নিন্দনীয় অর্থে ব্যবহৃত হয়। অবশ্য, ষোড়শ শতকে মগ, ফিরিঙ্গী ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের অত্যাচার-নিপীড়নে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল এক সময় উৎপীড়িত ছিল এবং তা দেশের অভ্যন্তর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল। তবে বর্তমান রাখাইনরা ওই মগ জলদস্যুদের উত্তরাধিকার নয় এ কথা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
পৃথিবীর উন্নত এবং অনুন্নত বিভিন্ন দেশে সংখ্যালঘুদের সমস্যা সর্বজনীন। তৎসত্ত্বেও তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের একটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবে বাংলাদেশের রাখাইন জাতিগোষ্ঠীর সমস্যা সর্বজনীন মানবাধিকার বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর নিঃসন্দেহে। সম্পাদিত এ গ্রন্থটিতে বিভিন্ন লেখক রাখাইন জাতির প্রাগৈতিহাসিক পরিচিতি, পূর্ববঙ্গে রাখাইনদের আগমনের পটভূমি, রাখাইন বসতির আদিরূপ ও বিস্তার, ব্রিটিশ আনুকূল্যে বাংলাদেশের রাখাইনদের বৃহত্তর অভিবাসন ও বর্তমান পরিপ্রেক্ষিত এবং ভৌত পরিচয়, সাংস্কৃতিক-নৃতাত্ত্বিক পরিলেখ, ভৌগোলিক নৃতত্ত্ব, অর্থনৈতিক নৃতত্ত্ব, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ ও মনোবৃত্তি, জাতিগত প্রকৃতি, ধর্ম ও ভাষা, শিক্ষা, পরিবার ও বিবাহ প্রথা এবং সম্পত্তির উত্তরাধিকার ধারা, বিয়ে, বর্ষবরণ ইত্যাদি আলোচনা করেছেন অত্যন্ত বিশ্বস্ততা ও সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে।
Report incorrect information