Category:সমকালীন উপন্যাস
নীল ফড়িং
রাতের শহরটা এক অদ্ভুত নির্জনতা বয়ে বেড়াচ্ছিল। রাস্তার বাতিগুলো নিস্তব্ধ আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল, যেন তারা কোনো অদৃশ্য রহস্যের সাক্ষী। সেই রাস্তায় একলা হেঁটে চলেছে রিফাত। পায়ে হাওয়া লাগিয়ে, গায়ে হলুদ পাঞ্জাবি, আর হাতে একটা পুরোনো বই। বইটা কী, সে নিজেও জানে না- শুধু অনুভব করে যে এই বইটার মধ্যে এক গভীরতা আছে, যার শেষ নেই।
রিফাতের পরিচিতি অনেকটা অদ্ভুত। সে কাউকে চিনে না, কেউ তাকে চেনে না। তবুও সে যেন সবকিছু জানে। শহরের আনাচে-কানাচে, বাতাসের গুঞ্জন, মানুষের মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা কথা- সবকিছুই তার জানা। তার চারপাশে এক অদ্ভুত রহস্যময় পরিবেশ। কেউ বলে সে পাগল, কেউ বলে দার্শনিক। কিন্তু রিফাত নিজেকে কী ভাবে, সেটা শুধু সে-ই জানে।
রিফাতের জীবনটা একেবারেই সাদামাটা। সে কোনো চাকরি করে না, কোনো দায়িত্ব নেয় না, কোনো বাধ্যবাধকতা মানে না। শহরের অলিগলিতে ঘুরে বেড়ানো, মানুষের মধ্যে না থেকেও তাদের অনুভূতির মধ্যে ঢুকে পড়া, এসবই তার জীবনের অংশ।
রিফাতের জীবনে একমাত্র ব্যতিক্রম হল নীরা। নীরা হলো রিফাতের জীবনের একমাত্র মানুষ, যাকে সে নিজে বেছে নিয়েছে। নীরা একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে, খুব সাধারণ মেয়ে, কিন্তু তার মধ্যে আছে এক অদ্ভুত মাধুর্য। নীরা যখন হেসে ওঠে, তখন মনে হয় পুরো পৃথিবীটা হাসছে। নীরা খুবই সাদাসিধা পোশাক পরে, কিন্তু তার সহজ-সরল ভাবেই সে নিজেকে অসাধারণ করে তোলে। তার চলাফেরায় আছে এক ধরনের স্বাভাবিকতা, যা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে। নীরা যখন হাঁটে, তখন মনে হয় তার পায়ের নিচের জমি যেন নিজে থেকে পিছু হটে তাকে জায়গা করে দিচ্ছে। সে যখন কথা বলে, তার কণ্ঠের মাধুর্য অন্যদের মুগ্ধ করে। নীরার হাসি এক অদ্ভুত আনন্দের ঝিলিক এনে দেয়। রিফাতের কাছে নীরার হাসি পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর জিনিস। সে মনে করে, নীরা হাসলেই যেন পুরো পৃথিবীটাই হাসছে। নীরার এই হাসিতে এমন এক উষ্ণতা আছে যা রিফাতকে সবসময় তার কাছে টেনে রাখে। নীরার উপস্থিতি
Report incorrect information