পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের থেকে আসা মানুষের জাতি, সাহিত্য আর সংস্কৃতির মিলনক্ষেত্র লাতিন আমেরিকা। পঞ্চদশ শতক থেকে ইয়োরোপের আইবেরিয়ান উপদ্বীপ (মূলত স্পেন, পর্তুগাল) থেকে দলে দলে দস্যুরা আসতে থাকে। ভূমিজ ইন্ডিয়ান যাঁরা এখানে বাস করেছেন হাজার হাজার বছর এবং গড়ে তুলেছেন মাইয়া, ইনকা, আসতেক প্রভৃতি সভ্যতার ভিত্তিভূমি – গণহত্যা ও আরও নানান উপায়ে তাঁদের মেরে ফেলা হয়েছে – কেবল বলিভিয়া, পেরু ও গুয়াতেমালায় তাঁরা দেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। অন্য দেশগুলিতে তাঁদের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। ‘মেস্তিসো’ মূলত শ্বেতকায় পুরুষ ও ভূমিজ নারীর বর্ণসংকর প্রজাতি। এল সালভাদোর, পারাগুয়াই ও ওন্দুরাসে তাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, অন্য কয়েকটি দেশে প্রধান সংখ্যালঘু। ‘মুলাটো’ ইয়োরোপ থেকে আসা শ্বেতকায় ও আফ্রিকা থেকে বলপূর্বক ধরে আনা কৃষ্ণকায় মানুষের মিশ্রণ, দোমিনিকান রিপাবলিকে এঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, অন্য দেশে সংখ্যায় খুবই কম। বাকি মানুষের মধ্যে রয়েছে ‘সাম্বোস’ অর্থাৎ কৃষ্ণকায় ও ভূমিজ মানুষের মিশ্রণ আর খুব সামান্য কিছু কৃষ্ণকায় এবং এশিয়ার মানুষ। এই সব মানুষেরই অবদান রয়েছে লাতিন আমেরিকার সাহিত্যে।
প্রায় চার দশক ধরে কবি অংকুর সাহা লাতিন আমেরিকার কবি ও কবিতায় নিমগ্ন। ক্যালিফোর্নিয়ায় বাস করার সূত্রে এসপানিওল ভাষার সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগাযোগ। এই প্রথম তাদের একটি নির্বাচিত সংকলন প্রকাশিত হল গ্রন্থাকারে। এই সংকলনে তিনি নির্বাচন করেছেন বারোটি অনুবাদ-প্রবন্ধ, লাতিন আমেরিকার আটটি দেশ থেকে। আর্হেন্তিনা, চিলে, মেহিকো ও গুয়াতেমালার কবিদের দুটি করে এবং উরুগুয়াই, বেনেসুয়েলা, নিকারাগুয়া ও এল সালভাদোরের কবিদের একটি করে।