হিন্দুধর্মের অন্যতম ধারা বৈষ্ণবধর্ম সাধারণ কোনও বিষয় নয়। মহাসাগরের মতো তার ব্যপ্তি। ফন্তু ধারার মতো প্রবাহিত হয়েছে চতুর্দিকে। বৈষ্ণবধর্মের শিকড় ছুঁতে সেইসব ধারাকে একত্রিত করে খোঁজার চেষ্টা হয়েছে। লেখক তাঁর পূর্ব গ্রন্থের সাফল্যের পরিপূর্ণতা আনতে চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনের সম্পূর্ণ একটি অন্যদিক নিয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করেছেন। মহাপ্রভু ছিলেন বাংলার বিদ্রোহী পুরুষ। হিন্দুধর্মকে বাঁচাতে নিরলস সংগ্রাম করে গিয়েছেন। বৈদিক যুগে লালিত বৈষ্ণবধর্মকে সর্বসাধারণের কাছে উন্মুক্ত করেছেন একমাত্র তিনিই। আজকের হরিনাম আন্দোলনের যে বিশ্বজোড়া ব্যপ্তি, সেটা সম্ভব ছিল না, যদি না শ্রীচেতন্যের আবির্ভাব হতো। অথচ, সেই মহান বিদ্রোহীকে আমরা হারিয়েছে অত্যন্ত আশ্চর্যজনক ভাবে। তাঁর অপ্রকট হওয়ার কাহিনি সম্পূর্ণ ধোঁয়াশায় ঘেরা। কিন্তু কেন এমন হবে? কি-ইবা ছিল তাঁর অপরাধ? কেনই বা তাঁর তিরোধানের পরপরই বাংলা, ওড়িশায় দীর্ঘ ৫০ বছর হরিনাম সংকীর্তনের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কারাই বা করেছিল? এই সব বিতর্কিত কিছু প্রশ্নের উত্তর খোঁজার সামান্য চেষ্টা চলেছে লেখকের এই দ্বিতীয় গ্রন্থে। সেই সঙ্গে আলোকপাত করা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে কীভাবে বৈষ্ণব আন্দোলন ফের মূলস্রোতে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছে। অর্থাৎ, চৈতন্য পরবর্তী বৈষ্ণবধর্ম কোন খাতে প্রবাহিত হয়েছিল। কারাই বা ছিলেন বৈষ্ণবধর্মকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত করার মূল কারিগর। তা আলোচনা করতে গিয়ে পর্যায়ক্রমে এসেছেন নিত্যানন্দ থেকে শ্যামানন্দ। জাহ্নবামাতা থেকে গঙ্গাদেবী হয়ে শ্রীনিবাস তনয়ার আখ্যান।
Title
শ্রীচৈতন্যের অন্তর্ধান অস্তমিত বৈষ্ণব মহিমা ও উত্তরণ